পানি কমতে শুরু করেছে সুনামগঞ্জের হাওর-নদীতে

সুনামগঞ্জে গত তিন দিন ভারী বৃষ্টি হয়নি। একই সময়ে জেলার উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও তুলনামূলক কম বৃষ্টি হয়েছে। এতে পাহাড়ি ঢল নামার পরিমাণও কমেছে। ফলে জেলার নদ-নদী ও হাওরগুলোতে পানি কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে জেলার সব নদ–নদীর পানিই বিপৎসীমার নিচে রয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে সুনামগঞ্জ ও চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টি হলে জেলার নদ-নদী ও হাওরে আবার পানি বাড়বে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কে কয়েক দিন সরাসরি যান চলাচল বন্ধ থাকলেও দুই দিন ধরে আবার তা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে ওই সড়কের শক্তিয়ারখলা ও আনোয়ারপুর এলাকায় এখনো পানি রয়েছে।

পাউবো জানিয়েছে, সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আজ রোববার (৪ জুন) বেলা তিনটা পর্যন্ত পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি কমেছে ২০ সেন্টিমিটার। ভারী বৃষ্টি না হলে পানি আরও কমবে বলে ধারণা করছে পাউবো।

একই সময়ে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে ২৮০ মিলিমিটার। গত ২৯ জুন চেরাপুঞ্জিতে ৫৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। যে কারণে পরের দুই দিন উজান থেকে ব্যাপক পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামে। ওই একই সময়ে সুনামগঞ্জে ৩৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। এতে করে উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার আশঙ্কা দেখা দেয়। কিন্তু গত তিন ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের সদর, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তবর্তী হওয়ায় উজানের ঢল নামার পর প্রথমেই এই তিন উপজেলা প্লাবিত হয়। চলতি মাসের শুরুতেও উজান থেকে প্রচুর পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করে। এতে করে সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলা, আনোয়ারপুর ও দুর্গাপুর এলাকার সড়ক প্লাবিত হয়। সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কে সে সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ সময় উপজেলার শ্রীপুর, বালিজুড়ি ও আনোয়ারপুর বাজারেও ঢলের পানি প্রবেশ করে। এই তিন উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো এখনো প্লাবিত।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ’পানি কিছুটা কমেছে। সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের দুটি স্থানে এখনো পানি থাকলেও যান চলাচল করছে। আগাম বন্যার আশঙ্কা ও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এই উপজেলার সব ইউনিয়নেই সরকারের পক্ষ থেকে দরিদ্র মানুষের ত্রাণসহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলার ২ হাজার ১০০ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী সহায়তা দেওয়া হবে। মঙ্গলবার ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে বলে।’

সুনামগঞ্জ পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী মো. আতাউর রহমান জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী সুনামগঞ্জে আরও দু-এক দিন বৃষ্টি হতে পারে। এখন পানি কমতে শুরু করেছে। তবে ভারী বৃষ্টি হলে পানি আবারও বাড়বে।

সুনামগঞ্জমিরর/এসপি

x