এমপি-হুইপসহ বহিষ্কার হচ্ছেন এক ডজন নেতা
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য (এমপি) স্বপন ভট্টাচার্য ও সদ্য সাবেক হুইপ আব্দুল ওহাবসহ প্রায় এক ডজন প্রভাবশালী নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।
শনিবার জেলার নেতারা বর্ধিত সভা করে তাদের বহিষ্কার করতে কেন্দ্রে চিঠি পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।
গত ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে যশোর-২ আসনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী রফিকুল ইসলাম, যশোর-৪ আসনে সদ্য সাবেক হুইপ আব্দুল ওহাব ও যশোর-৫ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ স্বপন ভট্টাচার্য ভোট যুদ্ধে নামেন। যশোর-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী খান টিপু সুলতান বিদ্রোহী প্রার্থী স্বপনের কাছে পরাজিত হন। এছাড়া যশোর-৪ ও যশোর-২ আসনে নৌকার প্রার্থীরা নির্বাচিত হলেও বিদ্রোহীদের কাছে ভালোই নাস্তানাবুদ হতে হয় তাদের।
এখন দলের প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নেতারা সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় তাদের বহিষ্কার করতে কেন্দ্রে রেজুলেশন পাঠানো হচ্ছে।
জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মীর জহুরুল ইসলাম জানান, যশোর-৪ আসনে সদ্য সাবেক হুইপ আব্দুল ওহাব ও যশোর-৫ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ স্বপন ভট্টাচার্য দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ করে ভোট যুদ্ধে নামায় তাদের বহিষ্কার করতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এছাড়া নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে কাজ করায় মনিরামপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আমজাদ হোসেন লাভলুসহ এ উপজেলার ৮ নেতাকে বহিষ্কার করতেও রেজুলেশন দেয়া হয়েছে। তবে যশোর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী রফিকুল ইসলাম কোনো পদে না থাকায় তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি।
মীর জহুরুল ইসলাম আরও জানান, একই সঙ্গে পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্রকে যশোর থেকে প্রত্যাহারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জেলা আওয়ামী লীগ রেজুলেশন পাঠাচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এসপির গাফিলতির কারণে যশোরের অভয়নগরের মালোপাড়া এবং মনিরামপুরের ঋষিপল্লীতে ননদ বৌদির ওপর পৈশাচিক নির্যাতন হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিতে বলা হলেও এসপি ব্যর্থ হন। এজন্য তাকে প্রত্যাহারে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করার জন্য বর্ধিত সভায় রেজুলেশন দেয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ১৪ জানুয়ারি যশোর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনের স্বপন ভট্টাচার্যসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৯ নেতাকে বহিষ্কার করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী রেজা রাজু। এসময় জেলা পুলিশ সুপারকে (এসপি) ১৫ দিনের মধ্যে যশোর থেকে বদলির দাবিও করা হয়।
ওই সময়ে বহিষ্কৃতরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও মনিরামপুর থেকে কলস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বপন ভট্টাচার্য, মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন লাভলু, সদস্য এসএম নজরুল ইসলাম, অজিত ঘোষ, হাবিবুর রহমান ভোলা, গৌতম চক্রবর্তী, তপন কুমার পবন, হাবিবুর রহমান খান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক স ম আলাউদ্দিন।
প্রসঙ্গত, যশোরে নির্বাচন হওয়া চার সংসদীয় আসনের মধ্যে তিনটিতে আওয়ামী লীগ ও একটিতে বিদ্রোহী বিজয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগে বিজয়ীরা হলেন- যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনে অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম, যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর-বসুন্দিয়া) আসনে রণজিৎ কুমার রায় ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে ইসমত আরা সাদেক এবং যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনে বিজয়ী হয়েছেন বিদ্রোহী স্বপন ভট্টাচার্য।