সুনামগঞ্জের উন্নয়নের জন্য আমার কণ্ঠ সোচ্চার থাকবে : পীর মিসবাহ এমপি
সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনের নতুন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেছেন, সংসদে নবীন হতে পারি, কিন্তু আপনাদের অঙ্গীকার করে যাচ্ছি, যত দিন সংসদে থাকব, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অধিবেশন কক্ষে বোবা দর্শক হয়ে বসে থাকব না। অবহেলিত সুনামগঞ্জের উন্নয়নের জন্য আমার কণ্ঠ সোচ্চার থাকবে।
রোববার দুপুরে সুনামগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্টে জেলা জাতীয় যুব সংহতির উদ্যাগে তাকে দেওয়া অভ্যর্থনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা যুব সংহতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোশনূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অভ্যর্থনা সভায়, পীর মিসবাহ বলেন, জাতীয় পার্টিকে সাংগঠনিকভাবে অতীতে যেমন হালকা করে দেখার সুযোগ ছিল না, এখনও নেই। ভবিষ্যতে সুনামগঞ্জ হবে জাতীয় পার্টির দূর্গ। তাঁকে মনোনয়ন দেয়ায় সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবং জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা বরণ করে নেয়ায় গভীর কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি সুনামগঞ্জের রাজনীতিতে সাবেক মন্ত্রী মরহুম ইকবাল হোসেন চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী মরহুমা মমতাজ ইকবালের রাজনৈতিক সততার ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, এই সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন মরহুম ওবায়দুর রেজা চৌধুরী, মরহুম আব্দুজ জহুর, মরহুম হোসেন বখতের মতো মুুক্তিযুদ্ধের বীর সংগঠকরা। আমি গরীবের নেতা আলফাত মোক্তারের ভাষাণপানি আন্দোলনের কর্মী ছিলাম। আমি কমরেড বরুণ রায়ে ত্যাগে রাজনীতিকে কাছে থেকে দেখেছি। ইকবাল হোসেন চৌধুরী ও শহরের আলোকিত নেতা অকাল প্রয়াত মমিনুল মউজদীনের দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী আন্দোলনের সামনের কাতারের কর্মী ছিলাম।
পীর মিসবাহ আরো বলেন, সেইসব বরেণ্য রাজনৈতিক নেতাদের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারীত্ব নিয়েই তাদের ধুলোমাখা পথে হাঠবেন। তিনি পরিষ্কার বলেন, ইকবাল হোসেন চৌধুরী যেমন ক্ষমতার দম্ভ দেখাননি, তেমনি তিনি বা তাঁর লোকজন কোথাও প্রভাব বিস্তার করতে যাবেন না। তাঁর দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও কালোটাকা রুজির পথে হাটার কোন ইচ্ছা নেই। জনতার কাতারে থেকে কাধে কাধ মিলিয়ে সুনামগঞ্জের যোগযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও হাওরের ফসলরক্ষার উন্নয়নের রাজনীতির পথে হাটবেন।
অভ্যর্থনা সভায় বক্তব্য রাখেন, সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও শহরের প্রবীণ ব্যক্তিত্ব শামরান আলী, জেলা জাপার সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তার হোসেন, সদর উপজেলা জাপার আহ্বায়ক রশীদ আহমদ, জেলা জাপা নেতা জসিম উদ্দিন লাল, জেলা যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র মনির উদ্দিন, জাপা নেতা অ্যাডভোকেট মানিক মিয়া, গিয়াস উদ্দিন, সাজ্জাদুর রহমান সাজু প্রমুখ।
এর আগে সকালে সিলেট থেকে রওয়ানা দিয়ে বেলা ১টায় সভামঞ্চে আসার আগে আহসান মারা সেতুর কাছে এলে তাঁর নির্বাচনী এলাকার তরুণরা মোরসাইকেল শোভাযাত্রা সহকারে শোডাউন দিয়ে তাঁর গাড়িবহর সভামঞ্চে নিয়ে আসেন।
এসময় সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানদের অনেকেই তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল নিয়ে তিনি তাঁর হাছননগরের বাসভবনে এসে মিলাদ মাহফিলে যোগ দেন। আসার পথে পৌরসভার সমনে মেয়র আইয়ুব বখত জগলুল তাঁকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
উল্লেখ্য, সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার পর রোববারই প্রথম নিজ শহর সুনামগঞ্জে আসেন তিনি।