উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে বিএনপি
নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও এবার উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। তৃণমুল নেতাকর্মীদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে নীতিগতভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে দলটি এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত এখনো জানায়নি।
বিএনপির দলীয় সূত্রগুলি দাবি করছেন, উপজেলা নির্বাচনে চমক দেখাতে চায় তারা। সোমবার রাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। খালেদা জিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে নীতিগত সম্মতি দিয়েছেন। তবে দুএকদিনের মধ্যে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামে আলোচনার পর করণীয় ঠিক করা হবে।
দলীয় সূত্রগুলি জানাচ্ছেন, উপজেলা নির্বাচনে তৃণমুল নেতাকর্মীরা অংশ নিতে চান। এ ব্যাপারে ক্রমাগত তৃণমুলের চাপ বাড়ছে কেন্দ্রের ওপর। উপজেলা নির্বাচনের মতো স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা দ্রুতই চাঙ্গা হবার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। উপজেলা নির্বাচনে ভালো করবে বিএনপি- এমন কথা নেতাকর্মীরা জোর দিয়ে বলছেন। এতে ভবিষ্যত আন্দোলনে নির্বাচিত এসব জনপ্রতিনিধি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারবেন বলেও কেন্দ্রকে বোঝাচ্ছেন।
তবে দলের মধ্যে এর বিপক্ষেও মত আছে। একটি একটি অংশ মনে করছে, এ নির্বাচন সরকারের কৌশলের একটি অংশ। এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা বিএনপির বেগবান আন্দোলনের লাগাম টেনে ধরে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্যখাতে নিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নেতাকর্মীদের আন্দোলনমূখী রাখতে সংসদের মতো উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করা উচিত বিএনপির।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, আমাদের দৃষ্টিতে এ সরকার অবৈধ। এই বিবেচনায় কোনো নির্বাচন করার অধিকার তাদের নেই। সরকার আইনের দৃষ্টিতে সরকার অগ্রহণযোগ্য, তাই তাদের অধীনে নির্বাচনও গ্রহণযোগ্য নয়। এ কারণে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেওয়া ঠিক হবে না।’
এদিকে বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে দলের স্থানীয় নেতাদের অংশ নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অন্তত তৃণমূলের ব্যাপক আগ্রহ আর দলের ব্যাপক জনপ্রিয়তায় এই নির্বাচনে অংশ নিতে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হবে দলটি। কারণ, দল না করলেও বিএনপির অনেক নেতাই এতে অংশ নেবে যা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
এই কমিশনের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না-দাবি করলেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ না। তবে স্থানীয় নির্বাচনকে বিএনপি সবসময় ইতিবাচকভাবে দেখে। সিটি কর্পোরেশনের মতো উপজেলা নির্বাচনকেও গুরুত্ব দেবে দলটি। এ ক্ষেত্রে দলের কেউ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিলে তাকে বাধা দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, গত রোববার নির্বাচন কমিশন উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। প্রথম পর্যায়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি ১০২টি উপজেলা পরিষদে ভোট গ্রহণ হবে। বাকিগুলোতে মার্চ থেকে জুন নাগাদ পর্যায়ক্রমে ভোট গ্রহণ করা হবে।