পরিবর্তন আসছে বিএনপি’র নেতৃত্বে
বিএনপি আসন্ন ষষ্ঠ কাউন্সিল অধিবেশনে এর নেতৃত্বে বড় ধরণের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন করে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
দলীয় সূত্র জানায়, দলটি দ্রুতই কাউন্সিল অধিবেশন করার পরিকল্পনা করছে। মার্চে এই অধিবেশন হতে পারে।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, দলের প্রধান থেকে শুরু করে কর্মীরা দ্রুত কাউন্সিল করার পক্ষে। কারণ তারা বর্তমান নেতৃত্বে হতাশ। তাই আমরা চাই মার্চের মধ্যেই একটি কাউন্সিল অধিবেশন করতে।
দলের আরও কয়েক জন নেতা জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া দলের বেশ কিছু সিনিয়র নেতার প্রতি বিরক্ত এবং তিনি মনে করেন, এই নেতৃত্ব নিয়ে সরকারের ওপর কোন চাপ সৃষ্টি করা যাবে না।
তারা বলেন, এই পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া রাজপথে সরকার বিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে দলের শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে চান। পরিকল্পনা অনুযায়ী দলকে গতিশীল করতে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী স্থায়ী কমিটি ও উপদেষ্টা কমিটিতে পরিবর্তন এবং কিছু নতুন মুখ আসছে।
দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৩ বছরের জন্য নির্বাচিত বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মেয়াদ ২০১২ সালের ৮ ডিসেম্বর শেষ হয়ে গেছে। দলের পঞ্চম কাউন্সিল অধিবেশন ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর পর আর কোন কাউন্সিল অধিবেশন হয়নি। কমিটির মেয়াদও পার হয়ে গেছে এক বছরেরও বেশী সময় আগে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান জানান, কাউন্সিল অধিবেশন করার জন্য দলের ওপর প্রচ- চাপ রয়েছে। বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা বর্তমান নেতৃত্বে হতাশ।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক নেতার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক মামলা আছে এবং অনেকে আটক আছেন। আমাদের আটক নেতারা যদি দ্রুত মুক্তি পান তাহলে আমরা মার্চের মধ্যে কাউন্সিল অধিবেশন করতে পারব।
জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, নতুন ও তরুণরা ষষ্ঠ কাউন্সিল অধিবেশনে অগ্রাধিকার পাবেন।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ দলের কাউন্সিল অধিবেশন করার সিদ্ধাšত্ম ছিল। কিন্তু ১৩ মার্চ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বড় ধরণের অভিযান চালিয়ে অনেক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও টাকা নিয়ে যায়। এ অবস্থায় ওই কাউন্সিল হতে পারেনি।
মাহবুব বলেন, আমাদের কাউন্সিল প্রায় এক বছর দুই মাস পিছিয়ে গেছে। এ জন্য সরকারই দায়ী। শত শত বিএনপি নেতা আটক অথবা মিথ্যা মামলায় আসামী হয়ে আছেন। এ কারণে আমরা কাউন্সিল অধিবেশন করতে পারছি না এবং আন্দোলনও জোরদার করতে পারছি না।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু কোন সময় উল্লেখ না করেই বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাউন্সিল হবে।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন এবং দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম একই সাথে চলবে। কাউন্সিল সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা খুব শীগগিরই তারিখ নির্ধারণ করব।
তিনি বলেন, ষষ্ঠ কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের নেতৃত্বে গতিশীলতা আনা হবে।
দলের চেয়ারপার্সনের একজন উপদেষ্টা জানান, খালেদা জিয়া নতুন ও তরুণ নেতৃত্ব নিয়ে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে চান।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে স্থাপিত হয় বিএনপি। এরপর মাত্র ৫টি কাউন্সিল অধিবেশন হয়েছে। দলের বিধান রয়েছে প্রতি তিন বছরে একবার করে কাউন্সিল অধিবেশন করার। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট