ইউক্রেনে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, বিক্ষোভ-বিরোধী আইন বাতিল
ইউক্রেনে দু’মাস ধরে চলা প্রতিবাদ-বিক্ষোভের অবসান ঘটানোর চেষ্টায় পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মাইকোলা আজারভ।
মঙ্গলবার তিনি পদত্যাগের প্রস্তাব দেয়ার পরপরই তা গ্রহণ করেন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ।
ইউক্রেনের সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে গোটা মন্ত্রিসভারই পদত্যাগ ঘটল। তবে নিয়মানুযায়ী, নতুন সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত মন্ত্রিসভার সদস্যদেরকে ৬০ দিন পর্যন্ত দায়িত্বে থাকার অনুরোধ করেছেন প্রেসিডেন্ট।
ওদিকে, বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে পাস হওয়া বিতর্কিত আইনটিও বাতিল করেছে ইউক্রেনের পার্লামেন্ট।
দেশে সঙ্কট শুরুর পর ইয়ানুকোভিচ প্রথমবারের মতো বাস্তবিক অর্থেই এ ছাড় দেয়ায় কিয়েভের ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দেখা গেছে উচ্ছ্বাস। তবে তার কাছ থেকে আরো ছাড়ের আশায় রাজপথ দখলে রাখারই প্রত্যয় জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে দেশের সংঘাতময় পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক আপোসের লক্ষ্যে পদত্যাগের প্রস্তাব দেন আজারভ।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আরো বেশি সামাজিক ও রাজনৈতিক সমঝোতার সুযোগ এবং সংঘাতের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের ক্ষেত্র তৈরি করতে আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার জন্য আমি প্রেসিডেন্টকে ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছি।”
সরকার চলমান দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি ।
বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে ইউক্রেনে পাস হওয়া বিতর্কিত আইনটি নিয়ে পার্লামেন্টে এক জরুরি অধিবেশনে বিতর্ক চলার মধ্যে আজারভ এ পদক্ষেপ নেন।
পার্লামেন্টে এরই মধ্যে বিপুল ভোটে বাতিল হয়ে গেছে ওই আইন। আইনটি চালু হওয়ার দু’সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে তা বাতিল হল।
ইউক্রেন সরকার রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের(ইইউ) সঙ্গে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর না করায় গত নভেম্বরে দেশটিতে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজধানী কিয়েভে চলতি সপ্তাহজুড়ে চলা সহিংস বিক্ষোভে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
চলতি বিক্ষোভটি শুরু হয় রাজপথে আন্দোলন বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে সরকারের আইন পাস করাকে কেন্দ্র করে। ইউক্রেন সরকারের এধরনের পদক্ষেপের নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।
অস্থিরতার অবসান ঘটানোর চেষ্টায় প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন এবং তাদেরকে সরকারের শীর্ষ পদে আসীন হওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু বিরোধী নেতারা সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ায় ব্যর্থ হয় সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রচেষ্টা।