বিমানের নিউ ইয়র্ক ফ্লাইট আবার পেছাচ্ছে
লিজে উড়োজাহাজ নেয়া নিয়ে জটিলতার কারণে ঘোষিত সময়ে শুরু হচ্ছে না বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-নিউ ইয়র্ক ফ্লাইট।
সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা-নিউ ইয়র্ক ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি শুরু এবং ৪ জুন ফ্লাইট চালুর কথা জানিয়েছিলেন বিমানের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কেভিন স্টিল।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এই রুটে আবার ফ্লাইট চালু করতে ইজিপসিয়ান এয়ারলাইন্স থেকে দুটো উড়োজাহাজ লিজে আনার কথাও জানান তিনি।
কিন্তু একদিন পরই মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে কেভিন বলেন, “যে দুটো উড়োজাহাজ লিজে আনার কথা চলছে সেগুলোর লিজ পদ্ধতি নিয়ে বিমান বোর্ড আরো পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছে। এখনো প্রস্তাবনা বাতিল বা অনুমোদন হয়নি।”
টিকিট বিক্রির তারিখ পেছানোটা প্রায় নিশ্চিত হলেও জুন থেকে ফ্লাইট শুরুর আশা এখনো ছাড়েননি বিমান এমডি।
তবে সোমবারের বৈঠকে থাকা বিমান পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিউ ইয়র্ক ফ্লাইটের বিষয়টি বোর্ড অনুমোদন করেনি, এ কারণে ফ্লাইট শুরুর তারিখ পিছিয়ে যাবে।
কী কারণে বোর্ড এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখনো এফএএ এর রেটিং অনুসারে ক্যাটাগরি-১ এ উন্নীত হয়নি। এ কারণে এদেশে নিবন্ধিত কোনো উড়োজাহাজ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার অনুমতি পাবে না।
“আর বিমান ড্রাই লিজ পদ্ধতিতে উড়োজাহাজ নিতে যাচ্ছে। এ পদ্ধতিতে উড়োজাহাজ নেয়া হলে সেটিও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার পাবে না।”
এজন্য বোর্ড বিমানকে নতুন করে ওয়েট লিজ পদ্ধতিতে উড়োজাহাজ নিতে চুক্তি করতে বলেছে। তার মানে পুরো প্রক্রিয়াটি আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।
বিমান চলাচলের পরিভাষায় দুই ধরনের লিজ পদ্ধতি প্রচলিত আছে। এর মধ্যে ড্রাই লিজ পদ্ধতিতে দীর্ঘ মেয়াদে ভাড়ায় উড়োজাহাজ আনা হয়, যাতে উড়োজাহাজের ক্রু, রক্ষণাবেক্ষণসহ সব সেবা ভাড়াগ্রহিতার দায়িত্বে থাকে।
অন্যদিকে ওয়েট লিজে স্বল্পমেয়াদি পদ্ধতিতে উড়োজাহাজের ক্রু ও রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্য সব সেবা ভাড়াদানকারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকে।
ওয়েট লিজ পদ্ধতিতে মিশর থেকে উড়োজাহাজ আনা হলে এটির নিবন্ধন থাকবে সে দেশেই। মিশর এফএএ এর রেটিং এ ক্যাটাগরি-১ রাষ্ট্র হওয়ায় তাদের উড়োজাহাজ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা নেই।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশনস বিভাগের পরিচালক এস এম নাজমুল আনাম বলেন, “বিমান যদি ওয়েট লিজ পদ্ধতিতে উড়োজাহাজ ভাড়ায় আনে সেক্ষেত্রে ফ্লাইট শুরু করতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু চুক্তিটি ড্রাই লিজ পদ্ধতিতে হলে এখনই বিমান ফ্লাইট শুরু করতে পারবে না।”
“মিশর ক্যাটাগরি-১ দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ তাদের উড়োজাহাজ ওয়েট লিজ পদ্ধতিতে ভাড়া নিয়ে নিউইয়র্ক ফ্লাইট শুরু করতে পারবে।”
যুক্তরাষ্ট্রে কোনো দেশের উড়োজাহাজের ফ্লাইট চালাতে হলে সে দেশের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাসোসিয়েশনের (এফএএ) ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র দরকার হয়। বাংলাদেশের এই ছাড়পত্র না থাকায় ১৯৯৬ সালে এফএএর নিষেধাজ্ঞায় ঢাকা-নিউ ইয়র্ক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা রুটটিতে আবার ফ্লাইট চালু করতে গত বছরের ১৭ অগাস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করে বাংলাদেশ।