সমুদ্র সৈকতে উড়ছে নানা রঙের ঘুড়ি
রং-বেরঙের ঘুড়ি উড়ছে এখন বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকতের আকাশে। দর্শনার্থীদের চোখে বিস্ময়ের ঘোর ছড়িয়ে অদূর আকাশে হারিয়ে যাচ্ছে ঘুড়ি, ফিরে আসছে ফের ঘুড়িওয়ালার কব্জায়।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে শুক্রবার বিকেলে শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী জাতীয় ঘুড়ি উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। আগ থেকেই সৈকতের আকাশে ঘুড়ির ওড়াউড়ি খেলা চোখে পড়লেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর পুরো সৈকত ছাড়িয়ে উত্তাল সমুদ্রের বুক বরাবর নীল আকাশে উড়ে চলে হাজার রঙের- হাজার ঢঙের ঘুড়ি।
বিকেল ৪টায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সী-ইন-পয়েন্টে এ উৎসবের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঘুড়ি উৎসবের মাধ্যমে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একটি ধারাবাহিক বিনোদনের সুযোগ হলো। এ বিনোদনেও অনেক কিছু শেখার আছে। একটি আকাশে যত বেশি ঘুড়িই ওড়ানো হোক না কেন, আকাশকে ঢাকা যাবে না। আকাশ অনেক বিশাল এবং উদার। এ আকাশে নানা রঙে ঘুড়ি উড়বে এটাই স্বাভাবিক।
ঘুড়ির কোনো জাত নেই, ধর্ম নেই উল্লেখ করে হাসানুল ইক ইনু বলেন, আকাশের মত উদার হয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং সমাজ ব্যবস্থা পরিচালনা হচ্ছে। এখানে সকল ধর্মের মানুষ বসবাস করবেন। বাংলাদেশে বসবাস করতে হলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে মানতে হবে। যারা মুক্তিযুদ্ধকে মানবেন না, তারা বাংলাদেশে বসবাস করার অধিকার রাখেন না।
এর আগে, ‘প্রকৃতি পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব সবার, ধর্ম যার যার, উৎসব আনন্দ সবার’ শীর্ষক স্লোগানকে সামনে রেখে শুরু হওয়া এই উৎসবের উদ্বোধন করে বিশাল আকৃতির ঘুড়ির ফেস্টুন উত্তোলন করেন তথ্যমন্ত্রী।
ঘুড়ি উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জুন। তিনি বলেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করতে ঘুড়ি একটি মাধ্যম হতে পারে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী এ ঘুড়ি প্রতি বছর নির্ধারিত সময় উড়ানো হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের-অঞ্চলের পর্যটকরা ঘুড়ি ওড়ানোর শখ ও দেখার ইচ্ছা নিয়ে সৈকতে আসবেন। চীন এ আয়োজনে সহায়তাও অব্যাহত রাখবে।
আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশনের সভাপতি ড. এ আর খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, কক্সবাজার-রামু আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা আখতারুজ জামান খান কবির, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. দীপেন ভট্টচার্য প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগ থেকেই বিশাল সমুদ্র তীরবর্তী বিস্তীর্ণ সৈকতের আকাশজুড়ে নানা রকম রঙ-বেরঙের ঘুড়ি ওড়াতে থাকেন আয়োজকরা। ড্রাগন কাইট, সিরিজ কাইট, ট্রেন কাইট, বিশাল পকেট কাইট, স্ট্যান্ড কাইটসহ নানা নামের এসব ঘুড়ির গোত্তা খাওয়া এবং দূর আকাশে হারিয়ে যাওয়া মুগ্ধ করছিলো দর্শনার্থীদের।
শনিবার দু’দিনব্যাপী এ উৎসব শেষ হবে। ঘুড়ি ওড়ানো ছাড়াও উৎসবে ঘুড়ি কাটা-কাটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে এবং ফানুস উত্তোলন করা হবে। উৎসব শেষে প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে।