চাঁদে ও মঙ্গলে তৈরি হতে যাচ্ছে পানি ও অক্সিজেন

চাঁদের বুকে পানি ও অক্সিজেন তৈরির প্রযুক্তি পরীক্ষা নিয়ে চালিয়েছে নাসা। একদিন মানুষ চাঁদের বুকে কিংবা মঙ্গলে বসতি গড়ে তুলবে। শুরু হয়ে গেছে তারই প্রাথমিক ধাপ। গবেষকেরা বলছেন, চার থেকে ছয় বছরের মধ্যেই চাঁদের বুকে তৈরি হবে পানি আর মঙ্গলে অক্সিজেন। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া।

সম্প্রতি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার গবেষকেরা এমন একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন। তাঁরা চাঁদ ও মঙ্গলের বুকে রোবোটিকস মিশন পরিচালনা করবেন। ২০১৮ সালে চাঁদের বুকে পানি তৈরির প্রকল্প ও ২০২০ সালে মঙ্গলে রোবটের সাহায্যে অক্সিজেন তৈরির কাজ শুরু করতে চান তাঁরা।

পৃথিবীর বাইরে কোথাও সেখানকার সহজলভ্য উপাদান কাজে লাগিয়ে জীবন ধারণের উপযোগী পানি ও অক্সিজেন তৈরির এটা প্রথম প্রকল্প। তাঁরা এই গবেষণা প্রকল্পের নাম দিয়েছেন ‘ইন-সিচু রিসোর্স ইউটিলাইজেশন বা ইসরু (আইএসআরইউ)।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, ইসরুর উদ্দেশ্য হচ্ছে মহাকাশ অভিযানের সময় যাতে খরচ, পরিশ্রম ও ওজন কমানো যায়, তার জন্য সেখানকার উপাদান কাজে লাগিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা তৈরি করে নেওয়া। এ ধরনের উদ্যোগের ফলে অদূর ভবিষ্যতে মহাকাশ যাত্রায় সুফল পাবেন নভোচারীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের হাউসটনের লুনার অ্যান্ড প্লানেটারি ইনস্টিটিউটের গবেষক পল স্পুডিস জানিয়েছেন, পৃথিবী থেকে পানি, বাতাস এবং অন্যান্য উপকরণ বয়ে নেওয়া মানে অতিরিক্ত ভার বহন করা। এসব উপাদানের বদলে যদি বাড়তি কম্পিউটার কিংবা অন্যান্য গবেষণার উপাদান পাঠানো সম্ভব হয়, তবে মিশন বেশি কার্যকর হতে পারে। তাই গবেষণার প্রয়োজনীয় উপকরণ বেশি করে পাঠানোর জন্য ইসরুর মতো প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা চাঁদের বুকে এমন রোবট পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন, যা সেখানকার পৃষ্ঠে গর্ত করবে এবং পানি তৈরির প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে তাতে তাপ দেবে। তাপের ফলে যে বাষ্প তৈরি হবে তা শীতলীকরণ করে তৈরি হবে পানের উপযোগী পানি।

নাসার গবেষকেরা বলছেন, শুধু চাঁদের বুকে পানি তৈরি করে ক্ষান্ত হতে চান না তাঁরা। এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়িয়ে মঙ্গলের বুকে অক্সিজেনও তৈরি করবেন তাঁরা। ২০২০ সালে মঙ্গলে পরিচালিত হবে এ ধরনের একটি রোবোটিকস মিশন। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইড সংগ্রহ করে তা বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অক্সিজেনে রূপান্তর করবে এই মিশনে পাঠানো একটি যন্ত্র।