সরস্বতী পূজা আজ
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তর উৎসব সরস্বতী পূজা আজ মঙ্গলবার। এদিনে সরস্বতী ‘বিদ্যার দেবী’ হিসেবে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন।
প্রতিবছর মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যাদেবী সরস্বতীর এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। জ্ঞান ও ললিতকলার অধিষ্ঠার্থী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষানুরাগী ভক্তরা দেবীর পায়ে অঞ্জলি দেন। অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে নিজেকে আলোর পথে উৎসারিত করতে দেবীর পায়ে প্রণতি জানান।
প্রথম প্রভাতে প্রতিটি পূজামণ্ডপ অঞ্জলি দেওয়ার মধ্য দিয়ে পূজা কার্যক্রম শুরু হয়।
দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবং বিএনপি চেয়ারপারসর বেগম খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন।
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী মতে, ‘সরস্বতী বিদ্যা দেবী। ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণের প্রকৃতি খণ্ডের প্রথম অধ্যায় বলা হয়েছে- বুদ্ধিরূপা, বাক্যরূপা, বিদ্যারূপা। সঙ্গীত ও শিল্পকলার দেবী হিসেবে সরস্বতী পূজিত হয়ে থাকেন, স্মৃতি ও মেধা দান করেন। সব মিলিয়ে সরস্বতী সর্ববিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবেই পূজিত হয়ে থাকেন।’ পদ্মপুরাণ মতে, ‘দেবী সরস্বতী আদ্যন্তবিহীনা, শ্বেতপদ্মে আসীনা, শ্বেতপুষ্পে শোভিতা, শ্বেতবস্ত্র-পরিহিতা এবং শ্বেতগন্ধে অনুলিপ্তা। অধিকন্তু তাহার হস্তে শ্বেত রুদ্রারে মালা; তিনি শ্বেতচন্দনে চর্চিতা, শ্বেতবীণাধারিণী, শুভ্রবর্ণা এবং শ্বেত অলঙ্কারে ভূষিতা।’
বৈদিক যুগের শুরুতে সরস্বতীর প্রধান পরিচয় ছিল নদী হিসেবে। আর্যরা ভারতে প্রবেশের পর ব্রহ্মাবর্ত নামক একটি স্থানে প্রথম বসতি স্থাপন করেছিলেন। সেই স্থানের একটি নদীকে আর্যরা সরস্বতী নামে আখ্যায়িত করেন। এই নদীটি ক্রমে ক্রমে পবিত্র নদী হিসেবে আর্যদের কাছে সম্মানিতা হয়ে ওঠে। বেদে সরস্বতী নদীর উল্লেখ আছে।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে রাজধানীতে শতাধিক মণ্ডপে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে সব চেয়ে বড় সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছে সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও আলাদা আলাদা পূজামণ্ডপের আয়োজন করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঢাবির বিভিন্ন হল, বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, ইডেন কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, শাঁখারীবাজার ও তাঁতীবাজারসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সরস্বতীর পূজার আয়োজন করা হয়েছে।