আন্দোলনে অবিচল থাকার শপথ শাহবাগে
এক বছরের অর্জন ধরে রেখে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে সক্রিয় থাকার শপথ নিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজপথে নামা ‘নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধারা’ সাম্প্রদায়িক হামলা প্রতিরোধের শপথও নিয়েছে বুধবার।
যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড না হওয়ার ক্ষোভ থেকে ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে যে অবস্থান নেয়া হয়েছিল, তাতে আন্দোলিত হয় গোটা দেশ; আর বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে যা পরিচিত হয় ‘বাংলা বসন্ত’ নামে।
এক বছরের আন্দোলনে প্রথম যুদ্ধাপরাধী হিসেবে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের পর আন্দোলনের সূচনার দিনটি স্মরণ করছে গণজাগরণ মঞ্চ।
বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার মাধ্যমে শাহবাগে শুরু হয় দিনের মূল কর্মসূচি, যে স্থানটিকে প্রজন্ম চত্বর নামে ডাকেন আন্দোলনকারীরা।
জাতীয় সঙ্গীতের পর গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের শপথ পাঠ করান মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
শপথে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত এবং জামায়াতে ইসলামীর নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করা হয়। শপথ নেয়া হয় জামায়াত সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বয়কটেরও।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক দেশ বিনির্মাণে কাজ করারও অঙ্গীকার করেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী-সমর্থকরা।
শপথের পর শাহবাগ থেকে বের হয় ‘জাগরণ যাত্রা’। রাজধানীর কারওরান বাজার ঘুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হয়ে পুনরায় শাহবাগে ফিরে শেষ হয় এই মিছিল।
শপথ বাক্য পাঠ করানোর সময় মঞ্চে ইমরানের পাশে ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, মানবাধিকার সংগঠক খুশি কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক এমএম আকাশ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, রামেন্দু মজুমদার, ব্লগার মারুফ রসুল, আরিফ জেবতিক প্রমুখ।
এর আগে, সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের সম্মান জানানো হয় গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে।
জাগরণ দিবস পালনের তিন দিনের কর্মসূচির প্রথম দিন সন্ধ্যায় স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকর্মীদের স্মৃতিচারণ এবং রাতে অনুষ্ঠিত হবে মুক্তিযুদ্ধের পঙক্তিমালা পাঠ।
তৃতীয় দিন শুক্রবার সকাল থেকে অনুষ্ঠিত হবে চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা, বিকালে হবে জাগরণ সমাবেশ এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।