বাংলা ভাষার সঙ্গে বেঁচে থাকবেন হাসন রাজা
স্বল্প জীবনে সময়কে কাজে লাগালে হাসন রাজার মতো অমর হওয়া সম্ভব। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, বাংলা ভাষা যতদিন থাকবে, হাসন রাজা ততদিন বেঁচে থাকবেন।
শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় হাসন রাজা স্মরণে আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী লোক উৎসবের দ্বিতীয় দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
বাংলালিংকের সহযোগিতায় সুনামগঞ্জ জুবলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার ১৫৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে হাসন রাজা লোক উৎসবের আয়োজন করে হাসন রাজা পরিষদ।
সালেহ চৌধুরী বলেন, একজন মানুষের ভেতরে অনেক মানুষ বসবাস করে। কারও ভেতরে তা মূর্ত হয়, কারও হয় না। সবার ভেতরে এই বোধও জন্মায় না। মরমি কবি হাসন রাজার ভেতরে সেই বোধ জন্মেছিল। চিন্তাশীল মানুষের মাঝে মৃত্যুর ভাবনা আসে। হাসন রাজার মাঝেও এসেছিল। স্বল্প জীবনে মানুষের কতটা কল্যাণে আসা যায় সেই চিন্তা করেছেন হাসন রাজা।
তিনি বলেন, সুনামগঞ্জে প্রতিষ্ঠাতব্য হাসন রাজা একাডেমির নাম পরিবর্তন করে বাউল একাডেমি রাখার চেষ্টা করছেন। অথচ এই এলাকায় কোনো বাউল ছিল না। যদি সন্ধান পাওয়া যায় তাদের চর্চাও করা উচিৎ, তবে অধিক গুরুত্ব থাকবে হাসান রাজার গানে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লিডিং ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ইসমত উল্লাহ আহসান বলেন, হাসন রাজাকে ‘রাজা’ বলা যাবে না। কারণ তিনি রাজার চেয়ে অনেক বড় ছিলেন। রাজার আয়েশী জীবন যাপন ছেড়ে তিনি যে সাদামাটা জীবন যাপন করতেন এবং তার মরমিবাদে যে মানবিকতা ছিল তা বর্তমান প্রজন্মে অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। আমাদের পঠন-পাঠনও যে রীতিতে চলছে তাতে কিছু দিন পর রবীন্দ্র নাথ, নজরুলের নামও অনেকে জানবে না। হাসন রাজার আদর্শ ছড়িয়ে দিতে পারলে আমাদের হারানো মানবিকতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বাংলালিংকের পিআর অ্যান্ড কমিউনিকেশন সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার খন্দকার আশিক ইকবালের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে হাসন রাজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সামারীন দেওয়ান বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভা শেষে হাসান রত্ন আব্দুল লতিফ, শ্বাশ্বতী চক্রবর্তী, তন্বী দে, হাসন রাজা শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীরা, দেওয়ান জাফরান রাজা চৌধুরীসহ অন্যান্য শিল্পীরা, রাধা রমন শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।
রাত ১১টার দিকে অনুষ্ঠানের শেষ আকর্ষন ক্লোজ আপ তারকা সৈয়দ আশিকুর রহমান আশিকের গান শুনতে উৎসুক শ্রোতার ঢল নামে স্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে। এসময় ‘আমি না লইলাম আল্লাজির নাম’, ‘কানাই তুমি খেয়র খেলাও কেনে’ সহ মোট আটটি গান পরিবেশন করেন তিনি।