তিন জমিদারের প্রস্তাব পাস, শঙ্কামুক্ত বাংলাদেশ

ভারত ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই), ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) ও ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) প্রণীত খসড়া প্রস্তাব অনুমোদিত হলো। শনিবার সিঙ্গাপুরে প্রয়োজনীয় ভোট পাওয়ায় আইসিসি বোর্ড অনুমোদন করল পরিচালনা, প্রতিযোগিতা ও অর্থনৈতিক এই পরিবর্তন কাঠামো। তবে বাংলাদেশের টেস্ট খেলা নিয়ে যেই শঙ্কা ছিল সেধরনের কিছু উত্থাপিত হয়নি এখানে।

গত মাসে দুবাইয়ে ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া আইসিসির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে ‘খসড়া প্রস্তাব’ পাসের জন্য আলোচনায় বসেছিল। কিন্তু বাংলাদেশসহ পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড বেঁকে বসায় তা ভেস্তে যায়। বিষয়টি আরও বিশদভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য আলোচনা সভা পেছানো হয়। অবশেষে কিছুটা পরিবর্তনের পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি) তাদের অবস্থান ধরে রাখলেও বাংলাদেশ ভোট দিয়েছে। এতে করে দশটি স্থায়ী দেশের মধ্যে প্রয়োজনীয় আটটি ভোট নিয়ে আইসিসিতে একক আধিপত্য পেয়ে গেল বিসিসিআই‘র নেতৃত্বে তিন জমিদার।

এই প্রস্তাব পাস হওয়ায় বিশেষ সুবিধা হলো সহযোগী দেশগুলোর। তাদেরও সুযোগ থাকছে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার। আইসিসি ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের চ্যাম্পিয়ন দলটি খেলবে র‌্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে থাকা দেশের সঙ্গে। ওই ম্যাচটি পাবে প্লে অফের মর্যাদা। আর বাংলাদেশ পূর্ণ সদস্যের র‌্যাঙ্কিংয়ে সবার শেষে।

তিন জমিদারের প্রস্তাব পাস হওয়ায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদে জায়গা পাচ্ছে এই বোর্ডগুলোর প্রধানেরা। আগামী জুলাই থেকে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসন আইসিসির সভাপতি হতে যাচ্ছেন। অন্যদিকে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) সভাপতি ওয়ালি এডওয়ার্ডস নবগঠিত নির্বাহী কমিটির প্রধান হবেন। এই কমিটি আইসিসি বোর্ডের কাছে রিপোর্ট পেশ করবে। ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড চেয়ারম্যান জাইলস ক্লার্ক ফিন্যান্স এন্ড কমার্শিয়াল অ্যাফেয়ার্স কমিটির নেতৃত্ব দেবেন।

দুবছরের জন্য প্রাথমিকভাবে তারা এই দায়িত্ব পালন করবেন ২০১৬ সাল পর্যন্ত। এই মেয়াদ শেষ হলে নির্বাচনের ডাক দিয়ে পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর পরিচালকদের ভোটের মাধ্যমে আইসিসি বোর্ডের সভাপতি নির্বাচিত হবেন। বাকি সাতটি পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে থেকে দুজন প্রতিনিধিকে নিয়ে বিসিসিআই, সিএ ও ইসিবি দুই সাবকমিটিতেই প্রতিনিধিত্ব করবে। অবশ্য ওই দুজন নির্বাচিত হবেন বোর্ডের মাধ্যমে।

রাজস্বের বেশিরভাগই পাবে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। পূর্ণ সদস্যের বাকি দেশগুলোকে অর্থসহায়তা দেওয়ার জন্য গঠন হবে টেস্ট ক্রিকেট ফান্ড। ২০২৩ সাল পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটের ঘরোয়া কর্মসূচী টিকে রাখতে সক্ষমতা অর্জনে এই তহবিল থেকে অর্থ ‍পাবে বাকি দেশগুলো।

আরও নিশ্চিত করা হয়েছে পূর্ণ সদস্য দেশগুলো দ্বিপাক্ষিক সম্মতির মাধ্যমে সিরিজ খেলতে পারবে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভবিষ্যত সফর পরিকল্পনা ঠিক রাখতে সমন্বিত সূচি নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ।

এছাড়া শীর্ষ চার দলকে নিয়ে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপও আপাতত বাদ দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। জনপ্রিয়তা ও লাভের কথা মাথায় রেখে এই টুর্নামেন্টের পরিবর্তে ২০১৭ ও ২০২১ সালে আয়োজন করা হবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।

ওয়ানডে ক্রিকেটে উন্নততর পারফরমেন্সের স্বীকৃতিতে শীর্ষ সহযোগী দেশগুলোসহ আইসিসির যে কোনো সদস্যের অংশগ্রহণে এই ইভেন্ট হতে পারে। ২০১৫-২০২৩ সাল পর্যন্ত আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ও আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সঙ্গে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বেশ লাভ এনে দিবে- নতুন কাঠামোতে এমন আশা করা হচ্ছে।

x