ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকবেই, তবুও…
মরমী কবি হাসন রাজা’র ১৫৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল হাসন রাজা পরিষদ। ভাটি এলাকায় বিনোদনের আকালের সময় এমন অনুষ্ঠান আয়োজনের চিন্তা সাধুবাদ পাওয়ার দাবিদার।
যাইহোক, অনুষ্ঠানটি আয়োজনে কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি ছিল, যা অস্বীকার করা যাবে না। সঠিক তত্বাবধায়ন ও বড় অনুষ্ঠান আয়োজনের অনভিজ্ঞতা অনুষ্ঠান পরিকল্পনা থেকে আয়োজন পর্যন্ত অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে! এমন নয় যে, সুনামগঞ্জে এর আগে এরকম আয়োজন হয়নি। এই শহরেই দর্শনীর বিনিময়ে নাটক, সঙ্গীতানুষ্ঠানসহ আরো অনেক আয়োজন সুসম্পন্ন হয়েছে কারন সেখানে ছিল আন্তরিকতার ছোঁয়া। শহর বড় হয়েছে, মানুষ বেড়েছে, বেড়েছে মানুষের নান্দনিক আবেশের চাহিদা। এখন যেনতেনভাবে অনুষ্ঠানের সুযোগ নেই। লোকজন হয়ত ভালো আয়োজনের প্রশংসা কম করবে কিন্তু সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করবে না। এমনটাই হচ্ছে আয়োজকদের ললাট লিখন! কিন্তু তাই বলে কি ভালো আয়োজন থেকে কি পিছিয়ে আসা উচিত? অবশ্যই না!
সম্পন্সর হিসাবে বাংলা লিংক ছিল, আর্থিকভাবে হাসন রাজা পরিবারের অনেকেই হয়ত হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাইলে সমস্যা কোথায়?
জুবিলির ১২৫ বছরের অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি বড় অনুষ্ঠান আয়োজনের সামর্থ্য একদল পারিবারিক লোকজন বা পরিচিত বন্ধুবান্ধব দ্বারা সম্ভব নয়। প্রয়োজন একদল পরিশ্রমী পেশাদার লোকজনের। পেশাদার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট দলই পারে এমন সমস্যার সমাধান করতে। যারা সার্ভিস চার্জের বদলে সসম্মানে আমন্ত্রন পত্র বিলি থেকে দর্শকদের বাড়ি ফেরা পর্যন্ত সকল দিক বিবেচনা করবে। এখন সার্ভিস চার্জের ভয়ে নিজেরাই সবকিছু করতে গেলে সমস্যা বাড়বে বৈ কমবে না।
সবাই অনুষ্ঠানটি আয়োজনের অব্যাবস্থাপনার কথা উল্লেখ করছেন, ভালো কথা কিন্তু কেউ অব্যাবস্থাপনার হেতু বা এর সমাধানের কথা উল্লেখ করছেন না। এহেন তুঘলকি আয়োজনের কারনে হাসন উৎসবের টাইটেল স্পন্সর বাংলা লিংকের ব্যাবসায়িক ক্ষতি হয়েছে সে সাথে আমাদের সুনামগঞ্জের সুনামেরও অনেক ক্ষতি হলো। ভবিষ্যতে বড় যেকোনো আয়োজনে ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট ফার্মের অনুপস্থিতি আরো বড় কমেডির দৃশ্যায়ন করতে পারে। দেখা যাক কি হয়!?