অরক্ষিত দিরাই-শাল্লার ২৭ হাওর
দিরাই ও শাল্লা উপজেলার ৪০/৪২ হাজার কৃষক বোরো নিয়ে দুশ্চিন্তায়, হাওর রক্ষাবাঁধে অর্থ বরাদ্ধ কমে যাওয়ায় ২৭ হাওরে শত কোটি টাকার বোরো ফসল অরক্ষিত রয়েছে। পাহাড়ে ঢল হলে অকাল বন্যায় ফসল হানির আশংকা করছেন তারা।
অসময়ে অর্থ বরাদ্ধ বাড়াতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঠ প্রকৌশলীরা সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয়ে চিটি চালাচালি করলেও তাদের কথা কেউ শুনছেনা। কোথাও কোথাও অর্থ বরাদ্ধ অর্ধেক কমে যাওয়ায় কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন প্রকল্প বাস্থবায়ন কমিটির সদস্যরাও।
শনিবার বিকেলে বরাম হাওরের তোফান খাড়ি ও বোয়ালিয়া বাঁধের কাজ পরিদর্শনে গেলে জেলা পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিনের কাছে পিআইসির সভাপতি ইউপি সদস্য আবুল হোসেন ও আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করেন, পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্ধ না হলে বাঁধ রক্ষা করা যবেনা, অকাল বন্যায় বাধ ভেঙ্গে ফসল ডুবলে কৃষকের তোপের মুখে আমাদেরকেই পড়তে হবে।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী খলিলুর রহমান বলেন, বরাম হাওরে ৪.৭৫৯ কিলোমিটার কাজের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে, আরো ৭০০ মিটার কাজ না করালে হাওরের ফসল অরক্ষিত থাকবে।
জেলা পাউবোর প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জনা গেছে, পাউবোর জগন্নাথপুর সাবডিভিশনের আওতায় ৩ ও দিরাই সাবডিভিশনের আওতায় ৯ হাওরে বাধের কাজ তদারকি করতে ৪ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী এবং দুই জন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ সব হাওরে ২৩৭ কিলোমিটার বাঁধের ক্ষতিগ্রস্থ অংশ পূনরাকৃতি (রি-সেকশনিং) ও অধিকতর নিচু অংশ উচু করনের জন্য বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা যা গত বছরের তুলনায় ২ কোটি কম। ২৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে বাধের কাজ সম্পন্ন করতে মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা রয়েছে।
চাপতির হওরে বাঁধের কাজ তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত পাউবোর উপ সহকারী প্রকৌশলী সহিদুল্লা বলেন, একটি হাওরের সাথে আরেকটি হাওরের যোগসূত্র থাকায় সবকটি ভাঙ্গা বন্ধ করা না গেলে এক দিকে যেমন হাওর অরাক্ষিত থাকে আরেক দিকে বাঁধের কাজে অর্থ বরাদ্ধের পুরোটাই জলে যায়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, গত পাঁচ বছরে কৃষকের দাবি ছিল হাওরের ঝুকিপূর্ণ অন্তত ৭/৮ টি বাঁধ স্থায়ী ভাবে করার, কিন্তু প্রতি বছর বাঁধের বরাদ্ধ নয়ছয় করতে পাউবো ইচ্ছে করেই এগুলো স্থায়ী করতে চাচ্ছে না।
জেলা পাউবোর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, আমরাও চাই হাওরে ঝুকিপূর্ণ বড় বাঁধগুলো স্থায়ী ভাবে করার কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্ধ না পাওয়ায় বাঁধগুলো স্থায়ী করা যাচ্ছে না।