১১৫ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু
চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বে ১১৫টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা এ ভোটগ্রহণ চলবে।
নির্বাচনী এলাকাগুলোতে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মঙ্গলবার থেকে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। সঙ্গে রয়েছে পর্যাপ্তসংখ্যক র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্য। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই শেষ হয়েছে মিছিল-মিটিংসহ সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। একই সঙ্গে বন্ধ হয়েছে সব ধরনের যান চলাচল। আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলেও দুর্বল মনিটরিং ও সমন্বয়হীনতার কারণে পার পেয়ে যাচ্ছেন অপরাধীরা।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন উপজেলা পরিষদের এ নির্বাচন দলীয় ব্যানারে না হলেও দলীয় প্রভাব রয়েছে সবখানেই। আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের পছন্দমতো প্রার্থী দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন দ্বিতীয় দফায় ১১৭টি উপজেলার তফসিল ঘোষণা করলেও ভোট হচ্ছে ১১৫টি উপজেলায়। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার নির্বাচন ১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে হাইকোর্টের আদেশে হাইমচর উপজেলার নির্বাচন বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে দ্বিতীয় পর্বের নির্বাচন সম্পন্ন করতে মঙ্গলবার থেকে উপজেলাগুলোতে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। নির্বাচনের আগে ও পরে মিলিয়ে মোট পাঁচ দিন তারা নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রতিটি উপজেলায় এক প্লাটুন করে সেনাবাহিনীর সদস্য টহল দিচ্ছেন। বড় উপজেলায় এ সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলায় সেনাবাহিনীর দুই থেকে তিনটি গাড়িসহ সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার ও একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া মোবাইল ফোর্স হিসেবে পর্যাপ্তসংখ্যক র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে।
প্রতিটি কেন্দ্রে একজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার একজন (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার ১০ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৬) এবং আনসার একজন (লাঠিসহ) ও গ্রামপুলিশ একজন করে নিয়োজিত রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ, পার্বত্য এলাকা, দ্বীপাঞ্চল ও হাওর এলাকায় এ সংখ্যা শুধু পুলিশের ক্ষেত্রে দুজন করা হয়েছে।
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ৪৬৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১১৬ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলার ৩১টি ভোটকেন্দ্রে মালামাল, নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া-আসার জন্য ইতোমধ্যে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
১১৫টি উপজেলায় মোট ১ হাজার ৩৭৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৫১৫, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) প্রার্থীর সংখ্যা ৫২১ এবং ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) প্রার্থীর সংখ্যা ৩৪০ জন।
মোট ভোটার ১ কোটি ৯৮ লাখ ৫১ হাজার ১৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৪১ ও নারী ভোটার ৯৯ লাখ ১৩ হাজার ৪৩৫ জন।
ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৮ হাজার ১৩৬টি, ভোটকক্ষ ৫৪ হাজার ৪৩৬টি। প্রিসাইডিং অফিসার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন করে ৮ হাজার ১৩৬ জন। সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার প্রতিটি ভোটকক্ষের জন্য একজন করে মোট ৫৪ হাজার ৪৩৬ জন এবং পোলিং অফিসারের সংখ্যা ১ লাখ ৮ হাজার ৮৭২ জন।
এ ছাড়া তৃতীয় পর্বে ৮৩টি উপজেলায় ১৫ মার্চ এবং চতুর্থ পর্বে ৯২টি উপজেলায় ২৩ মার্চ এবং পঞ্চম পর্বে ৭৪টি উপজেলায় ৩১ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।