শ্যালোমেশিন দিয়ে জলমহালের তলা শুকিয়ে চলছে মাছ শিকার!

সরকারি নির্দেশনার কোনোরকম তোয়াক্কা না করে ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের শেখের গাঁও গ্রামের সামনে শিলুন্দিঘা নামক জলমহালে গত এক সপ্তাহ ধরে দুটি শ্যালো মেশিন দিয়ে জলমহালের তলা সেচে ইজারাদার ও তার নিয়োজিত লোকজন মাছ ধরছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ অবস্থায় মাছের বংশ নির্বংশ হওয়াসহ জলমহাল সংলগ্ন সোনামড়ল হাওরের কয়েকশত একর বোরো জমিতে সেচ কার্য বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচেছ। এ নিয়ে এলাকার কৃষকেরা বাঁধা দিলেও এতে কোনো কর্ণপাত করা হচেছনা । সংশ্লিষ্ট প্রশাসনও এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে ।

জয়শ্রী ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,শিলুন্দিঘা নামক জলমহালটি জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনানাধীন। বাৎসরিক দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা ইজারামূল্যে ১৪২০ বঙ্গাব্দ থেকে ১৪২২ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত তিনবছরের জন্য জয়শ্রী ইউনিয়নের শেখের গাঁও- বাঘাউছা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির নামে এটি ইজারা দেওয়া হয়। জলমহালটির আয়তন একশত দুই একর তেতাল্লিশ শতক।

জয়শ্রী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বর্তমানে থানা যুবলীগ সদস্য মো. আব্দুল মুকিত জানান, জলমহালের তলা শুকিয়ে মাছ ধরা সরকারি ভাবে বেআইনি হলেও জলমহালটির ইজারাদার ও তাঁর লোকজন এটি মানছেন না। এ অবস্থায় চলতে থাকলে মাছের বংশ নির্বংশ হবে। পাশাপাশি এ বিল সংলগ্ন সোনামড়ল হাওরের শত শত একর বোরো জমিতে সেচ সুবিধা মারাত্মক ভাবে বিঘ্নিত হবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

শেখের গাঁ-বাঘাউছা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য ও জলমহালটির নিয়োজিত প্রতিনিধি মো. হারুন মিয়া দুটি মেশিন বসিয়ে জলমহালের তলা শুকিয়ে মাছ ধরার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমাদের সমিতির সকল সদস্যদের মতামত নিয়েই এভাবে মাছ ধরা হচেছ । তবে এটি আইনসম্মত না বেআইনি এটি দেখবে প্রশাসন। আমি এ নিয়ে কারো সঙ্গে কথা বলতে রাজি নই ।

সরোজমিনে বুধবার দুপুর সাড়ে বারোটায় সেখানে গিযে দেখা যায়, এ জলমহালটির পূর্ব পাশের এক কোণে তলা শুকিয়ে মাছ ধরার জন্য দুটি শ্যালো মেশিন বসানো রয়েছে। বিলের তলা থেকে ১০-১২ জন লোক মাছ ধরছেন।

মাছ শিকারের কাজে নিয়োজিত শেখের গাঁও গ্রামের উজ্বল মিয়া, খাইরুল, সুমন, সদ্দু মিয়া, ধন মিয়া, শফিক মিয়া, নজরুল, হিরন মিয়া জানান, বিলের তলা হিইচ্চ্যা মাছ ধরা ঠিক না বেঠিক তা আমরা জানিনা। আমরা হারুন মিয়ার কথামতো এইহানে মাছ ধরতাছি ।

জয়শ্রী ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, শ্যালো মেশিন বসিয়ে এ জলমহালের তলা সেচে মাছ মারার বিষয়টি আমি জানিনা। এভাবে যাতে কেউ মাছ না মারতে পারে সেজন্য সেখানে লোক পাঠানো হয়েছে ।

ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েছ আলম বলেন,এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিেেযাগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচেছ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ খালেদুর রহমান বলেন, জলমহালের তলা শুকিয়ে মাছ শিকার সম্পূর্নভাবে বেআইনি। এটি বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

x