আড্ডা, চৈতন্য ও একটিভ সিটিজেন্সের প্রতিবাদ লিপি
শনিবার সুনামগঞ্জে অনুষ্ঠিত মাদক সন্ত্রাস বিরোধী তারুণ্যের বসন্ত উৎসব এর আয়োজক সংগঠনগুলোকে অখ্যাত ও ভুইফোঁড় বলে জেলা যুবলীগের একটি অংশ বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করেছে। উৎসবটি যৌথভাবে আয়োজন করেছিল অরাজনৈতিক সংগঠন আড্ডা, ছোটকাগজ চৈতন্য এবং সামাজিক সংগঠন একটিভ সিটিজেন্স ইয়ূথ লিডার্স।
আয়োজক সংগঠন তিনটিকে অখ্যাত ও ভুঁইফোঁড় বলায় সুনামগঞ্জ মিরর ডটকমে একটি প্রতিবাদ লিপি পাঠিয়েছেন এই তিন সংগঠনের মুখপাত্র।
আড্ডার সভাপতি অলক চক্রবর্তী বাপ্পা, একটিভ সিটিজেন্সের সভাপতি বুরহান উদ্দিন এবং চৈতন্য সম্পাদক রাজীব চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়,
"আমরা অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনার সাথে প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হচ্ছি যে, সুনামগঞ্জের জনগণের স্বতস্ফ’র্ত অংশগ্রহণে গত ১ মার্চ শনিবার অনুষ্ঠিত মাদক সন্ত্রাস বিরোধী তারুণ্যের বসন্ত উৎসব এর আয়োজক সংগঠনগুলোকে অখ্যাত ও ভুইফোঁড় বলে জেলা যুবলীগের একটি অংশ বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করেছে। উৎসবটি যৌথভাবে আয়োজন করেছিল অরাজনৈতিক সংগঠন আড্ডা, ছোটকাগজ চৈতন্য এবং সামাজিক সংগঠন একটিভ সিটিজেন্স ইয়ূথ লিডার্স।
বিক্ষোভ মিছিল করে যুবলীগ নেতাকর্মীরা দাবী করেছেন, প্রখ্যাত সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবীর ইমনকে দূর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করে বক্তব্য দিয়েছেন।
এ ঘটনায় আমরা বিস্মিত ও স্তম্ভিত। উৎসব মঞ্চে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী কায়সার, সাবেক ডাকসু ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক সাংসদ গোলাম মাওলা রনি, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ সহ আরো বরেণ্য অতিথিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সেখানে সবাই দূর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তারা এসবের বিকাশে প্রতিবাদী হওয়ার আহ্বান জানান।
সাংসদ পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ তাঁর বক্তব্যে বিপথগামী তরুণদের মাদক-সন্ত্রাসের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে সর্বাÍক সহযোগিতা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বক্তব্য দেয়ার সময় পীর হাবিবুর রহমান কোথাও ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমনের নাম উল্লেখ করেননি। ব্যারিস্টার ইমন পীর হাবিবের ঘনিষ্ট বন্ধু ফজলুল কবীর তুহিনের ছোট ভাই। পীর হাবিবুর রহমান বলেছেন, সুনামগঞ্জের পাওয়ার স্টেশন বসানোর জমি অধিগ্রহণের নামে বড় ধরনের দূর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। সুনামগঞ্জের স¤পদ লুট করে ঢাকায় নিয়ে বিলাসী জীবনযাপন করার সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, দূর্নীতির টাকায় লন্ডনে মেমসাহেব রেস্টুরেন্টে শেয়ার কেনা হয়েছে।
পীর হাবিবুর রহমান ¯পষ্টকণ্ঠে বলেন, জনগণকে দেয়া অঙ্গীকার রক্ষার পথ থেকে বিচ্যুত হলে তিনি ছোটভাই সাংসদ পীর মিসবাহর সাথেও থাকবেন না। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ আমলে ফেনসিডিল নিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া আর ভারতীয় অবৈধ চোরাই মদের ব্যবসায়ীদের ডানে-বামে রেখে চলা আর যাই হোক, নান্দনিক সুনামগঞ্জে হয় না। এত সুন্দর অনুষ্ঠান ও গণমানুষের পক্ষে কথা বলাকে ঘিরে জেলা যুবলীগের একাংশের কর্মীরা যা করেছে তাতে কেবল আমরা নই, পুরো সুনামগ্নজের সাংস্কৃতিক অঙ্গন ব্যথিত। এই ধরনের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদের ভাষা আমাদের জানা নেই।
আমরা আরো বেশি মর্মাহত হয়েছি, সুনামগঞ্জের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যখন বন্ধাত্য নেমে এসেছিল এবং তরুণেরা অন্ধকার পথে ধাবিত হচ্ছিল ঠিক তখনই এই শহরের তরুণদেরকে আলোর পথে আনার জন্য এবং তাদের সৃজনশীলতা বিকাশে উৎসাহ দেয়ার জন্য আড্ডা, চৈতন্য ও একটিভ সিটিজেন্স ইয়ূথ লিডার্স তারুণ্য উৎসব আয়োজন করে। এসব সংগঠনের সঙ্গে সহস্রাধিক তরুণ-তরুণীরা সংগঠিত থাকলেও এদেরকে ভুঁইফোঁড় সংগঠন বলা হয়েছে। অভিভাবকেরাও আমাদেও ভাল করে চেনেন ও জানেন।
মাদক-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো যদি কারো গাত্রদাহের ব্যাপার হয় তবে আমাদের কিছু করার নেই।
আমরা শান্তি-ঐক্যের পথে বিশ্বাসী।"