আন্দোলনের ঘোষণায় উজ্জীবিত ১৯ দল

সাংগঠনিক সফরের অংশ হিসেবে ১ মার্চ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া রাজবাড়ী জেলায় ১৯ দলের সমাবেশে ঘোষণা দিয়েছেন, চলমান উপজেলা নির্বাচন শেষে সরকার পতনের আন্দোলনে যাবেন তারা। এর মাঝে সরকার যদি সুবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে নিজে থেকে পদত্যাগ করে তাহলে সরকারের জন্যই মঙ্গল। আর না হলে এই অবৈধ সরকারকে রাজপথে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করা হবে।

বিএনপি নেত্রীর এমন ঘোষণার পরে উজ্জীবিত সারাদেশের ১৯ দলের নেতা কর্মীরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান ব্রেকিংনিউজকে জানান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাংগঠনিক সফর আন্দোলনেরই অংশ। এসব সফরের মাধ্যমে আন্দোলনে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়বে। আর রাজবাড়ীর সফরে বেগম জিয়ার আন্দোলনের ঘোষণায় সামনের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে মাঠে থাকবে দলের নেতা-কর্মীরা।

স্থায়ী কমিটির এই সদস্য সামনের সাংগঠনিক সফর নিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই। ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। জনগণ এ সরকারকে ভোট দেয়নি। বিএনপি চেয়ারপার্সন জেলা সফরের মাধ্যমে এসব বিষয়ে কথা বলবেন। একই সাথে তিনি আন্দোলনে জনগণকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানাবেন।

লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান আরো বলেন, এসব সফরের মাধ্যমে আন্দোলনের পাশাপাশি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা বের হয়ে আসবে। সেই আলোকে দল কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জানান, আমরা আন্দোলনে আছি আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করব। এই সরকারকে হটাতে রাজপথে আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। আন্দোলনের ঘোষণা আসায় সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর আরো সম্পকৃত্ততা আরো বাড়বে।

বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা দলীয় প্রধানের আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণায় দারুণ উজ্জীবিত। তারা সরকার বিরোধী আন্দোলনে যাওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। ১৯ দলের তৃণমূল মনে করে সরকার বিরোধী দলকে নির্মূল করতে দমন নিপীড়ন শুরু করেছে। আন্দোলন ছাড়া সরকারের নির্যাতন থেকে বাঁচার আর কোন পথ নেই।

জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক মজিবুর রহমান জানান, সরকার দেশ থেকে গণতন্ত্র, মানুষের মৌলিক অধিকার, ইসলাম ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। সময় এসেছে এদের বিতাড়নের। গণতন্ত্র ও ইসলাম রক্ষায় এই সরকারকে সরানো ছাড়া কোন পথ নেই।

তিনি আরো জানান, বেগম জিয়ার আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণায় সবার মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকে সরকার বিরোধী আন্দোলন ঝিমিয়ে পড়েছে আর সরকার দমন নিপীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।

রাজবাড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি আলী নেওয়াজ খৈয়ম বলেন, আমরা সৌভাগ্যবান নেত্রী আমাদের এলাকায় এসে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা জেলা বিএনপি ঐক্যবদ্ধ ভাবে নেত্রী যখন ডাক দিবেন আন্দোলনের সবাই এক সাথে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে এ সরকারের পতন ঘটাবো।

ফেনী জেলা বিএনপির নেতা সৈয়দ মিজানুর রহমান ও গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক জানান, অতীতে আমাদের মাঝে বিভক্তি ছিল এখন আমরা ঐক্যবদ্ধ। সরকার বিরোধী আন্দোলনে এক সাথে মাঠে থাকব সবাই। নেত্রীর আন্দোলনের ঘোষণায় দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছে, সবার মনে আশার সঞ্চার হয়েছে।

জামায়াতের ফেনী শহর আমির আবদুল হান্নান জানান, উপজেলা নির্বাচনের ফলে ১৯ দলের নিস্ক্রীয় নেতাকর্মীরা আরো সক্রিয় হয়েছে। বেগম জিয়ার আন্দোলনের ঘোষণায় নেতা-কর্মীরা এই সরকারকে হটাতে এক কঠোর আন্দোলনের অপেক্ষায়।

এদিকে খালেদার আন্দোলনের ঘোষণাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ১৯ দলের নেতা-কর্মীরা। তারা মনে করেন, সরকারের জুলুম নির্যাতন থেকে রেহাই পাওয়ার একমাত্র উপায় রাজপথে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। এ ব্যতীত বিরোধী দলের আর কোন পথ নেই।

জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বলেন, ১৯ দলীয় জোট নেত্রী বেগম জিয়া যখনই আন্দোলনের ডাক দেবে, সবাই আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়বে।

জাপা একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর বলেন, খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। তার হাতকে শক্তিশালী করে দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলনে সরব থাকবো।

এছাড়া ১৯ দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দ্রুত সারাদেশে সরকার বিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়ার জন্য জোট নেত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।

x