সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মানে ভূষিত হচ্ছেন মরহুম ডা. হারিছ আলী
স্বাধীনতা পুরস্কার বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদক। এবারে অন্যদের সাথে দেশের এই সর্বোচ্চ সম্মাননা খেতাব ‘স্বাধীনতা পুরস্কারে’ ভূষিত হচ্ছেন ছাতকের মরহম ডা. মোহাম্মদ হারিছ আলী।
১৯৭১ ন্সলে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তরুণদের সংগঠিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন মরহম ডা. মোহাম্মদ হারিছ আলী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ৫ নম্বর সেক্টরের অধীন জেলা সাব-সেক্টরের রেজিমেন্টাল মেডিকেল অফিসারের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৯জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটকে চলতি বছরের স্বাধীনতা পুরস্কার দিচ্ছে সরকার।
রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বছরের পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করে। পুরস্কার প্রাপ্তদের মধ্যে আছেন সাবেক গণপরিষদ সদস্য মোহাম্মদ আবুল খায়ের। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য মরণোত্তর এ পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও তিনি বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রেকর্ড ও সংরক্ষণ করেছিলেন । মুক্তিযুদ্ধের সময় কুমিল্লার পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকা মুন্সি কবির উদ্দিন আহমেদ সে সময় সেনানিবাসের ব্রিগেড কমান্ডারের হাতে জেলা পুলিশের অস্ত্রভাণ্ডারের চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। পরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি অবস্থায় শহীদ হন তিনি। তাকেও এবার মরণোত্তর এ পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। একাত্তরে বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব পালন করা শহীদ কাজী আজিজুল ইসলাম এবার মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন। ওই দায়িত্বে থেকেও মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় সহায়তা দিয়ে গেছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে ৮ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আবু ওসমান চৌধুরী এবার স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ অধীনস্থ সেনাদল নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন তিনি।
মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন খসুরুজ্জামান চৌধুরী, ও শহীদ এস বি এম মিজানুর রহমান। ১৯৭১ সালর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন কিশোরগঞ্জের তখনকার মহকুমা প্রশাসক খসুরুজ্জামান চৌধুরী। সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়া মিজানুর রহমান ১৯৭১ সালের ৫ মে পিরোজপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় শহীদ হন। শিক্ষাক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিভাগের এম এন এ ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্বপালনকারী, ভাষা সৈনিক অধ্যক্ষ মো. কামরুজ্জামান (মরণোত্তর)। সংস্কৃতিতে এবারের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, যিনি মুক্তিযুদ্ধসহ সব গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনেই ছিলেন সক্রিয়।
আর কৃষি-গবেষণা ও উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এবার গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ক্ষেত্রে স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পুরস্কার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ।
২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এ পদক দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৫ মার্চ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পদক বিতরণ করবেন। এ পুরস্কারের জন্য মনোনীতরা একটি করে সোনার পদক এবং একটি সম্মাননাসূচক প্রত্যয়নপত্র পাবেন। এর সঙ্গে নগদ পুরস্কার হিসাবে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে দেয়া হবে।