মানবজাতির ইতিহাস শুধুই সামনে এগিয়ে যাওয়ার
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থপ্রতিমন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ এমএ মান্নান এমপি বলেছেন, ইতিহাস নিয়ে পড়ালেখা করলে দেখা যায়, মানবজাতির ইতিহাস শুধুই সামনে এগিয়ে যাওয়ার। পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীর মানুষেরাও সামনে এগিয়েছে। মাঝেমাঝে বাঁধা আসলেও সেসব বাঁধা পেরিয়েও সামনে এগোতে হয়।
ইন্সপায়ার নিউ জেনারেশন এর উদ্যোগে আয়োজিত তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মটিভেশনাল ওয়ার্কশপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শনিবার বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানটি হয়।
প্রায় আধাঘণ্টার দীর্ঘ বক্তব্যে অর্থপ্রতিমন্ত্রী নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের কাজে হাত দিয়েছে। সবই হবে, তবে হয়তো একটু ধীরে হতে পারে। শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি চঞ্চল, তিনি দ্রুত কাজ করে দেশকে একুশ শতকের দিকে এগিয়ে নিতে চান। সড়ক হবে, সেতু হবে, এই কলেজেরও উন্নয়ন হবে।
তিনি আরো বলেন, সরকারের প্রতিশ্রুতি হল দেশের প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। ইনশাল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের তালিকায় সুনামগঞ্জ প্রথমদিকেই থাকবে।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মেজর ছয়ফুল কবীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পের লিগ্যাল এডভাইজার ও সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবীর ইমন, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ সৈয়দ মহিবুল ইসলাম এবং দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরর সম্পাদক পংকজ কান্তি দে। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সহকারি অধ্যাপক জীবন কৃষ্ণ আচার্য্য।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ইন্সপায়ার নিউ জেনারেশনের উদ্যোক্তা ওয়েব ডেভোলপার সাজ্জাদুর রহমান পলিন।
হৃদয় খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথির উদ্দেশ্যে মানপত্র পাঠ করে কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারজিয়া হক ফারিন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিক পংকজ দে বলেন, আমিও এই কলেজের ছাত্র। আজ এরকম অনুষ্ঠানে এসে ভাল লাগছে।
উপাধ্যক্ষ সৈয়দ মহিবুল ইসলাম কলেজ কর্তৃপক্ষের নানা দাবী-দাওয়া তোলে ধরেন।
ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন বলেন, সুনামগঞ্জ সারাদেশের মানুষকে অনেককিছু দিয়েছে। আমাদেও বালি-পাথর-চুনাপাথর দিয়েই সারাদেশের মানুষ ঘরবাড়ি বানায়, অথচ এই সুনামগঞ্জই অনেককিছু থেকে বঞ্চিত। সেতুর কাজ শুরু হয়, অর্ধেক হয়ে আটকে যায়। রাস্তার কাজ শুরু হয়, অর্ধেক হয়ে আটকে যায়। এখন আমাদের কিছু পাওয়ার সময়। পেতে হবে।
সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন অর্থপ্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এই কলেজটার উন্নয়নের ব্যাপারে আপনি নজর দিলে আমি আপনার পাশে থেকে সহযোগিতা করব। নিজের ঘরের উন্নয়ন আগে করুন। তিনি বলেন, আমরা এই কলেজটিকে একটি আধুনিক কলেজ হিসেবে দেখতে চাই।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর মেজর ছয়ফুল কবীর চৌধুরী অনুষ্ঠানে আসার জন্য অর্থপ্রতিমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি দাবী করে বলেন, উচ্চশিক্ষা বিস্তারে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতেই হবে। সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা হোক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মটিভেশনাল ওয়ার্কশপ।
দুপুর ১টায় এ পর্বের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পের লিগ্যাল এডভাইজার ও সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবীর ইমন। মিলনায়তনে উপস্থিত থাকা শিক্ষার্থীদের সামনে ওয়ার্কশপটি পরিচালনা করেন ওয়েব ডেভোলপার সাজ্জাদুর রহমান পলিন, ওয়েব প্রোগ্রামার সুহাদ জামান এবং এসইও এনালিস্ট আবু বকর। তারা ক¤িপউটার ও প্রজেক্টরে প্রেজেন্টেশন প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীদের সামনে তথ্যপ্রযুক্তির নানা দিক তোলে ধরেন। আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল, ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনিং।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছার পর তাঁদের গার্ড প্রদান করে কলেজের বিএনসিসি প্লাটুনের ক্যাডেটরা। পরে অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ইন্সপায়ার নিউ জেনারেশনের স্বেচ্ছাসেবকেরা।