মাদক ও সন্ত্রাসের পক্ষে যারা তারা আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন
সুনামগঞ্জ-৪ (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেছেন, এবার হাওরের ফসল রক্ষাবাধে দুর্নীতি হলে সংশ্লিষ্ট পাউবো কর্মকর্তা ও পিআইসি সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের রক্ষা নেই।
দুর্নীতির কারণে হাওরের বোরো ফসল তলিয়ে গেলে এলাকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্নীতিবাজদের ধরে দুদকে দিয়ে দেবো।
সোমবার বিকেলে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা জাতীয় পার্টি তাকে দেওয়া সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথ বালেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মাস্টারের সভাপতিত্বে প্রেসক্লাবের মাঠে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনায় পীর মিসবাহ বলেন, দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসের প্রশ্নে কোন আপোষ নেই। ভদ্রলোকের মুখোশ পরে দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসের পক্ষে যারা অবস্থান নিবেন, গণপ্রতিরোধের মুখে তার ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন।
তিনি আরও বলেন, উড়ে এস জুড়ে বসে বাড়াবাড়ি করলে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। তিনি জনতাকে ডাক দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে রাজপথে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ার প্রস্তুতি নিতে আহবান জানান।
পীর মিসবাহ বলেন, ২০ বছরের আইনপেশায় কোনদিন কোন দুর্নীতির সঙ্গে আপোষ করিনি। আল্লাহ আপনাদর সেবা করার যে সুযোগ করে দিয়েছেন, তা আমি ইবাদত বলে মনে করি। জনগণের সম্পদ লুটপাট করে ঢাকা ও লন্ডনে প্রাসাদ করার খায়েস আমার অন্তরে নাই।
তিনি বলেন, বিশ্বম্ভরপুরের ফতেপুর ইউনিয়নে এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও যখন একটি বিদ্যুতের বাতি জ্বলার সুযোগ করে দেওয়া হয়নি ঠিক সেই মুহূর্তে পাওয়ার স্টেশন নির্মাণের জমি অধিগ্রহনের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হয়। আর সেই টাকায় লন্ডনে বিলাশবহুল রেস্তোরা মালিক বনে যান কেউ কেউ।
তিনি বলেন, এরাই সন্ত্রাস, দুর্নীতিকে লালন করেন। দশ-বারোজন সন্ত্রাসী সঙ্গে নিয়ে ঘুরে নেতা হওয়া যায় না, সন্ত্রাসীদের গডফাদার হওয়া যায়। আর সন্ত্রাসীদের গডফাদারা বরাবরই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হন।
তিনি বলেন, আমি যখন দুর্নীতি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সোচ্চার হয়েছি, তখন তারা একত্রিত হতে শুরু করেছে। আমি তাদের রক্তচক্ষুকে ভয় পাই না। কারণ আমি জানি, দুর্বত্ত-সন্ত্রাসীদের শক্তি মানুষের সম্মিলিত শক্তির কাছে কিছুই না।
তিনি আরও বলেন, আমার বাড়িটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আমার কোন সিন্ডিকেট থাকবে না। আমার কোন ডান হাত বাম হাত থাকবে না। সন্তান, ভাই মনে করে আপনারা আমার কাছে সরাসরি আসবেন।
পীর মিসবাহ বলেন, সংসদে আমি বোবা হয়ে বসে থাকবো না। এ এলাকার মানুষের সমস্যার কথা, উন্নয়নের কথা বলে যাব। তিনি বলেন, আমি সংসদে বলেছিলাম আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কোন স্বার্থের জন্য আপনাদের জন্য কোন মন্ত্রীর কাছে, সরকারি কোন কর্মকর্তার কাছে যাব না। কিন্তু আমার সুনামগঞ্জের মানুষর স্বার্থের জন্য আপনাদের কাছে বার বার আসব।
তিনি বলেন, সুরমা সেতুর ব্যাপারে যোগাযোগ মন্ত্রীকে তার প্রতিশ্রুতি কথা আমি স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। তিনি কথা দিয়েছেন, এ অর্থবছরে সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেবেন।
গণসংবর্ধনায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন, জেলা যুব সংহতির আহবায়ক মোহাম্মদ আলী খোশনূর, সদর উপজেলা জাপার আহবায়ক আব্দুর রশীদ, জাপা নেতা গোলাম মোস্তফা মাস্টার, উপজেলা যুব সংসহতির সভাপতি মহিম উদ্দিন প্রমুখ।
এসময় উপজেলার পলাশ ইউনিয়ন এর স্বপন কুমার পালের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠন থেকে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে।
এর আগে সুনামগঞ্জ থেকে বিশ্বম্ভরপুর আসার পথে ভাদেরটেক ইসলামিয়া দাখিল, পলাশ উচ্চ বিদ্যালয়, পলাশ ইউনিয়ন পরিষদ, হাজেরা-মুসলিম টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, কারেন্টের বাজার জামে মজিদ কমিটির পক্ষ থেকে তার সৌজন্যে পৃথক পৃথক সংবর্ধনায় যোগ দেন তিনি।
তিনি হাজেরা-মুসলিম টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে দু’টি কম্পিউটারের জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং কারেন্টের বাজার মসজিদের উন্নয়নের জন্য দেড় লাখ টাকা অনুদান ঘোষণা করেন। সন্ধ্যায় তিনি উপজেলা প্রসাশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।