শতভাগ দিয়ে খেলতে চান মাশরাফি
দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। প্রথমবারের মতো এতো বড় টুর্নামেন্টে এককভাবে আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ১৬ মার্চ থেকে শুরু হবে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছড়ানো এ টুর্নামেন্ট। জন্ম হতে পারে নতুন নতুন রেকর্ডের। এর আগে ফতুল্লার স্টেডিয়ামে স্বাগতিকরা ১২ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ১৪ মার্চ আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে।
প্রস্তুতি ম্যাচের আগে নিজেদের প্রস্তুতিটা ভালোভাবে সেরে নিচ্ছে তামিম-সাকিব-মুশফিকরা। মিরপুরে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের কঠোর অনুশীলন করতে দেখা যায়। অনুশীলন শেষে নানা বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দেশ সেরা পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজা।
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে ভারতে বিপক্ষে খেলার পর ইনজুরিতে পড়েন। কিছু দিন পরপর ইনজুরিতে পড়তে হয় মাশরাফিকে। তবে নিজের ফিটনেসের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো মনে করেন তিনি,‘হ্যাঁ আগের থেকে ভালো লাগছে। শেষ তিন দিনে দশ ওভারের মতো বোলিং করেছি নেটে। আগের থেকে ভালো লাগছে। প্রথম দিন যখন ব্যথা পেয়েছিলাম তার চেয়ে অনেকটা কমেছে। আজকেও আমি আশিভাগ বোলিং করেছি।’
দলের প্রয়োজনে যেকোনো ফরম্যাটে খেলতে প্রস্তুত নড়াইল এক্সপ্রেস। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলেন তিনি। ২৩ টি-টোয়েন্টিতে ২৩ উইকেট নেওয়া এই পেসার বলেন,‘যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তো খেলতেই হবে। আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত হচ্ছি। দলের প্রয়োজনে যেকোনো সময় আমি খেলতে প্রস্তুত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না। আমার প্রতি সবার প্রত্যাশা আছে। অনেকের চাওয়া পাওয়া আছে। আমি আমার সবকিছু দিয়ে খেলতে চাই।’
দলে নিজের থাকা না থাকা নিয়ে চিন্তিত নন তিনি। তবে তার বিকল্প দলে জায়গা পেলেও দল ভালো খেলবে মনে করেন মাশরাফি,‘যারা আছে তাদেরকে আমি আমার চেয়ে বড় করে দেখি। আমি বিশ্বাস করি যারা খেলে তারা অবশ্যই ভালো। সবার আলাদা দক্ষতা বা যোগ্যতা থাকে টিমকে দেওয়ার জন্যে। আমি বিশ্বাস করি যারা বাংলাদেশ টিমের জার্সি গায়ে দেয় তাদের একটা দায়িত্ব থাকে দলকে জেতানোর জন্যে।’
বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও ভালো করতে চান তিনি,‘আমি আশা করি আমার উপরের ব্যাটসম্যানরাই পুরো ইনিংস খেলে যাবে, আমার নামার দরকার পড়বে না। তারপরও যদি নামা লাগে আশা করি আমি আমার সাধ্যমতো ব্যাটিং করার চেষ্টা করব।’
অভিজ্ঞতার খাতিরে প্রথম রাউন্ড নিয়ে মাশরাফির পরিকল্পনা,‘১৬ তারিখে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমাদের প্রথম ম্যাচটা জিততে হবে। পরবর্তী যে দুটা আছে সেগুলোও জিততে হবে। সুপার টেনে যাওয়াটা আমাদের জন্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য তিনটি ম্যাচই জিততে হবে। তাহলে আমদের আত্মবিশ্বাসটা আরো ভালো হবে।’
আফগানরা ছাড়া অচেনা দল দুটি সর্ম্পকে ধারণা না থাকলেও পরিকল্পনামাফিক কাজ করবে স্বাগতিকরা। এমনটা জানালেন সাবেক অধিনায়ক,‘অবশ্যই আমরা পরিকল্পনা করব। এটা বিশ্বকাপ ম্যাচ। শুধু বিশ্বকাপ না যেকোন ম্যাচের আগে অপরিচিত দল সর্ম্পকে আলোচনা হয়। দলের মধ্যে একটা পরিকল্পনা করতে হবে।’
তিন বছর আগে দেশের মাটিতে ২০১১ বিশ্বকাপ খেলতে না পারায় দুঃখটা ছিল অনেক। তাই এবার শতভাগ দিয়ে খেলতে চান মাশরাফি,‘টি-টোয়েন্টি হচ্ছে এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষের প্রত্যাশা বেশি থাকে। আমি যদি খেলি আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে খেলব। বিশেষ করে বাংলাদেশ দলে আমার একটি দায়িত্ব আছে। শতভাগ দিয়ে খেলব। আর তখন খেলতে পারিনি সেটা অনেক কষ্টের ছিল।’
নিজেদের প্রচেষ্টা তো থাকবেই। দর্শকদেরও পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালেন মাশরাফি,‘টি-টোয়েন্টিতে যে কোনো কিছু হতে পারে। তবে আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে আমরা যেকোনো টিমকে হারাতে পারি। আমি মনে করি মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা খেলতে পারবো। তাদের বলব আমাদের জন্যে দোয়া করবেন। কারণ সমালোচনা করলে কাজটা কঠিন হয়ে যাবে।’