৩৫০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে
২০৩০ সালের মধ্যে ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভারত থেকে বর্তমানে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে এবং আরো ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।
বুধবার দশম জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে ছলিম উদ্দিন তরফদারের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান।
সামশুল হক চৌধুরীর এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে জনান, বর্তমান সরকার চলতি মেয়াদে দায়িত্ব নেয়ার পর অর্থনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি প্রকল্পকে প্রথম অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এগুলো হলো পদ্মা বহুমুখী সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকা মাস র্যা পিড ট্রানজিট (এমআরটি) উন্নয়ন মেট্রোরেল প্রকল্প, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর-কক্সবাজার প্রকল্প এবং এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় উল্লেখযোগ্য লক্ষ্য হলো, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের দিকে উন্নত সুসভ্য দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করা; ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্য রেখার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ১৩ শতাংশে নামিয়ে আনা। বিদ্যুতের বর্তমান উৎপাদনক্ষমতা ১১ হাজার মেগাওয়াট থেকে বাড়িয়ে ২৪ হাজার মেগাওয়াট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “সরকারের সঠিক রফতানি নীতি এবং তার বাস্তব প্রয়োগের ফলে ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ তার ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয় করতে সক্ষম হয়েছে, যেটি ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ছিল মাত্র সাড়ে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।”
মো. ছলিম উদ্দীন তরফদারের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা অনুযায়ী জানুয়ারি ২০১৪ থেকে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। চলতি বছর জানুয়ারিতে নাটোরে ৫২ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা হয়েছে।
বর্তমানে মোট ছয় হাজার ৮৮৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। এসব কেন্দ্র ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে। পাঁচ হাজার ৬৮৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যেগুলো ধারাবাহিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষর সম্ভব হবে। এলএনজি থেকে আনোয়ারা, যশোর ও মহেশখালীতে মোট তিন হাজার মেগাওয়াট এবং নিউক্লিয়ার থেকে এক হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিকল্পনাধীন রয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমানে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে আরও ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করার আলোচনা চলছে। এ ছাড়া, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিবেশী ভারত, নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমার থেকে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।”
মো. আফসারুল আমীনের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জানান, কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা মহাজোট সরকারেরই ছিল; কিন্তু বন্দরটি পিপিপি বা জিটুজি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে বিষয়টি একনেকে তোলা হয়নি।