৮১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ, গণনা চলছে

চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে ৪২ জেলার ৮১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন চলছে ভোট গণনা।

শনিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয়েছে বিকেল ৪টায়। এরপর সাড়ে ৪টা থেকে শুরু হয় ভোট গণনা।

চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় দফার এ ভোটগ্রহণ চলাকালে সহিংসতায় বাগেরহাটে ১ জন নিহত হয়েছে। রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও যশোরে সহিংসতা, বোমাবাজি, ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। তবে বেশিরভাগ উপজেলায়ই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন।

কারচুপির অভিযোগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফেনীর দাগনভূঁঞা, বরিশালের মুলাদি, বাগেরহাটের শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ এবং শরীয়তপুর সদর উপজেলায় নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি সমর্থিত বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, মোট ৯টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর, দিনাজপুর সদর ও নবাবগঞ্জ, নীলফামারী সদর, লালমনিরহাটের আদিতমারী, কুড়িগ্রাম সদর, রৌমারী ও চিলমারী, গাইবান্ধা সদর ও সাদুল্যাপুর, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, ভোলাহাট ও শিবগঞ্জ, নওগাঁর মান্দা, পোরশা ও ধামইরহাট, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, চারঘাট ও দূর্গাপুর, চুয়াডাঙ্গার দামুরহুদা, যশোরের মনিরামপুর, নড়াইলের লোহাগড়া, বাগেরহাট সদর, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, মংলা ও শরণখোলা, খুলনার পাইকগাছা, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ, ভোলা সদর, বরিশালের মুলাদী, হিজলা ও বাবুগঞ্জ, পিরোজপুরের নেছারাবাদ, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, শেরপুরের শ্রীবর্দী, ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া, গৌরীপুর, মুক্তাগাছা, ফুলপুর ও ধোবাউড়া, নেত্রকোনা সদর ও মোহনগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ সদর, কুলিয়ারচর ও হোসেনপুর, ফরিদপুর সদর, আলফাডাংগা, সদরপুর, চরভদ্রাসন, ভাঙ্গা ও মধুখালী, গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া, শরীয়তপুর সদর ও নড়িয়া, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী ও দেলদুয়ার, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, হোমনা, বুড়িচং, চৌদ্দগ্রাম, ব্রাহ্মণপাড়া ও তিতাস, চাঁদপুরের কচুয়া ও হাজীগঞ্জ, নোয়াখালীর সেনবাগ, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর, চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও সীতাকুণ্ড, রাঙ্গামাটির বরকল, বাঘাইছড়ি ও কাউখালি, মানিকগঞ্জের ঘিওর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর, ফেনীর দাগনভূঁইয়া এবং বান্দরবান সদর ও আলী কদম উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হয় এ দফায়।

ঘোষিত তফসিলে ৮৩ উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সহিংসতার কারণে গাজীপুরের শ্রীপুর ও সীমানা জটিলতার কারণে সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ভোটগ্রহণ উপলক্ষে এসব নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া মিটিং-মিছিল ও যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধজ্ঞা আরোপ করা হয়।

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ভোটের দুইদিন আগে বৃহস্পতিবার থেকে নির্বাচনী এলাকায় সেনা টহল শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে পাঁচদিন সেনাটহল চলবে।

প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন করে প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রতিটি ভোটকক্ষের জন্য একজন করে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন।

৮১টি উপজেলায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। প্রতিটি উপজেলায় এক প্লাটুন করে সেনাবাহিনীর সদস্য টহল দিচ্ছেন। সঙ্গে সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার ও একজন করে ম্যাজিস্ট্রেটও রয়েছেন। এছাড়া মোবাইল ফোর্স হিসেবে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), পুলিশ ও আনসার বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।

৮১ উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এক হাজার ১১৯ প্রার্থী। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৪১৯ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) প্রার্থীর সংখ্যা ৪২৩ ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংখ্যা ২৭৭ জন।

এসব উপজেলায় মোট ভোটার এক কোটি ৩১ লাখ ৮৫ হাজার ১৩ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৫ লাখ ৬৭ হাজার ৯৩২ ও মহিলা ভোটার ৬৬ লাখ ১৭ হাজার ১৮১ জন।

ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৪৪৪টি, ভোটকক্ষ ৩৫ হাজার ২৩১টি। প্রিজাইডিং অফিসার রয়েছেন পাঁচ হাজার ৪৪৪ জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৩৫ হাজার ২৩১ জন ও পোলিং অফিসারের সংখ্যা ৭০ হাজার ৪৬৪ জন।

এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার একজন (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার ১০ জন (নারী ৪, পুরুষ ৬ জন), আনসার একজন (লাঠিসহ) ও একজন করে গ্রাম পুলিশ দায়িত্ব পালন করেন। তবে ঝুঁকিপূর্ণ, পার্বত্য এলাকা, দ্বীপাঞ্চল ও হাওর এলাকায় দু’জন করে পুলিশ থাকবে।

৮১ উপজেলায় ভোট শান্তিপূর্ণ করতে ৩২৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৮১ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। (বাংলানিউজ)

x