"আমরা এক অদ্ভুত হীরক রাজার দেশে বাস করছি"
বিরোধী নেতাদের পালাক্রমে গ্রেপ্তার করে সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ১৯ দলীয় জোট নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শনিবার দলের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ নিম্ন আদালতে হাজির হলে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এবং দলের অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালামের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এতে সরকারের চরম প্রতিহিংসামূলক জুলুম নির্যাতনের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
তিনি বলেন, দেশবাসীর গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকারের পক্ষে এবং স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে কথা বলার অপরাধেই দলের মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আমরা এক অদ্ভুত হীরক রাজার দেশে বাস করছি যেখানে এক ব্যক্তির খেয়ালখুশিতেই দেশ চলছে। যেখানে সত্যের পক্ষে কথা বলার কোন অধিকার কারো নেই। বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে বেছে বেছে গুম, খুন ও পাইকারি হারে গ্রেপ্তার করছে। গোটা দেশকেই এক ভয়ংকর বন্দিশালায় পরিণত করেছে সরকার।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে পালাক্রমে আটকে রেখে তারা সিংহাসনকে অবৈধভাবে আঁকড়ে থাকতে চাচ্ছে। অগণতান্ত্রিক, জনবিরোধী, মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডের মাধ্যমে তারা জনগণ থেকে এতো বেশি দুরে সরে গেছে যে জনরোষ থেকে বাঁচতে জনদৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস ও আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাঁদাবাজি, জুলুমবাজি ও সন্ত্রাসের চরম মাত্রায় উপনীত হয়ে এই অবৈধ সরকার গণবিচ্ছিন্ন ও গণধিকৃত হয়েছে।
খালেদা জিয়া বলেন, বিরোধী দলকে ধ্বংস করতে বর্তমান অবৈধ সরকারের মহাপরিকল্পনা কখনোই আলোর মুখ দেখবে না। আওয়ামী লীগ কখনোই মানুষের মনের ভাষা বোঝার চেষ্টা করেনি, কারণ আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যই হচ্ছে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সবসময়ই অবজ্ঞা প্রদর্শন। স্বৈরাচারী নীতির কারণেই অতীতে তাদের পরিণতি ভাল হয়নি, আগামীতেও হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ন্যক্কারজনক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে চলমান আন্দোলনকে দুর্বল করা যাবে না। বরং সংগ্রামী জনগণ অবৈধ সরকারের সকল অনাচারের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রস্তুত হচ্ছে। অবিলম্বে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে দলের নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান তিনি।