সরকারি কলেজে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন
হাওর-বাওর, সবুজঘন গাছ ও লতা-পাতা, সুরমার টলটলে জল, পাখি ও পাহাড়ে ঘেরা এই শহরের সর্বত্রই মিশে আছে একটি নাম, মরমী কবি দেওয়ান হাসন রাজা। হাসন রাজা, শাহ আব্দুল করিম, রাধারমণের গানের জন্য সুনামগঞ্জের সুনাম সারাদেশেই ছড়িয়ে আছে। হাসনরাজার বিখ্যাত একটি গান, ‘কান্দে হাসনরাজার মন মুনিয়া রে…’।
মুনিয়া একটি পাখির নাম, অপরিসীম মমত্ববোধ নিয়ে অনেক কবিই তাঁর ভালবাসাকে সম্বোধন করেছেন মন মুনিয়া নামে। ভালবাসার শহর সুনামগঞ্জ, এই শহর কবিতার শহর, গানের শহর।
মঙ্গলবার ‘মন মুনিয়া’ শিরোনামে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
কলেজ মিলনায়তনে বেলা এগারোটায় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ঘোষণা করেন, কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মেজর ছয়ফুল কবীর চৌধুরী।
এসময় তিনি বলেন, সংস্কৃতিচর্চা মননশীলতা বাড়ায়, শিক্ষার্থীদের ভেতরের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করে। নানাধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জড়িত হলে এর মাধ্যমে মেধার বিকাশ ঘটে, এছাড়া নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও ভ্রাতৃত্ববোধও তৈরি হয়। সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চা নিজেকে সমৃদ্ধ করে।
সহকারি অধ্যাপক মো. জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, কলেজের উপাধ্যক্ষ সৈয়দ মহিবুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক নীলিমা চন্দ এবং কলেজের স্টাফ কাউন্সিলের যুগ্ম-সম্পাদক সহকারি অধ্যাপক মো. আব্দুর রকিব তারেক।
সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তব্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর মেজর ছয়ফুল কবীর চৌধুরী আরো বলেন, আমরা গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দেব না। কি করল না করল, সেটা দেখার দরকার নেই। বরং নিজের কাজ নিয়ে ভাবতে হবে, ভাল কাজ করতে হবে, আর নিজেকে সমৃদ্ধ করতে হবে। গতানুগতিক ধারা ভেঙ্গে বেড়িয়ে আসতে হবে আমাদের, এর জন্য প্রয়োজন সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা।
আলোচনা সভা শেষে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। মঙ্গলবারের প্রতিযোগিতার প্রথমদিনের ইভেন্টগুলো ছিল বাংলা কবিতা আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, দেশাত্ববোধক গান ও নজরুল সঙ্গীত। বিভিন্ন শ্রেণি ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশ নেয়। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পৃথক-পৃথকভাবে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন, সহযোগী অধ্যাপক কল্পনা তালুকদার, অশোক কুমার পাল, সহকারি অধ্যাপক হারুনুর রশীদ, ইভা রায়, প্রভাষক শামীম মিয়া, মাজহারুল ইসলাম, অলিউর রহমান প্রমুখ। প্রতিযোগিতা চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত।
বুধবার প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনে ইংরেজী কবিতা আবৃত্তি, নির্ধারিত বক্তৃতা, পুঁথিপাঠ, ধারাবাহিক গল্প বলা ও আধুনিক গান বিষয়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।