জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “জিয়াউর রহমান নামে মুক্তিযোদ্ধা হলেও আসলে তিনি স্বাধীনতাবিরোধী। গণতন্ত্র ধ্বংস ও দুর্নীতিই ছিল তার শাসনামলের মূল দিক। ১৯৭৫-এর পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পরাজিত শক্তি দোসর হিসেবে ক্ষমতা দখল করেছিলো।”
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর ৯৫তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা আরো বলেন, “জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে, যত যুদ্ধাপরাধী ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ছিলো তাদেরকে নিয়ে সরকার গঠন করেন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা আমাদের স্বাধীনতার বিরোধী, তারা কখনোই ভাবতেই পারেনি, বাংলাদেশ স্বাধীন হবে, রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পাবে তারা এত দক্ষতার সাথে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারবে, এটা বোধ হয় তারা ভাবতেই পারেনি। তারা পরাজয়ের প্রতিশোধ নিলো ৭৫-এর ১৫ আগস্ট।”
তিনি বলেন, “তখন একটি জিনিস লক্ষণীয় ছিলো, নব্য বাম যারা, আল্ট্রা (নব্য) ডানপন্থী যারা, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এবং নব্য বামপন্থী সর্বহারা, কমিউনিস্টসহ নানা ধরণের সংগঠন মিলে মিশে এক হয়ে গেলো। তারা নতুন দেশ গড়ায় সহযোগিতা না করে পদে পদে বাধা দেয়া শুরু করলো।”
জিয়াউর রহমান কার্ফিউ গণতন্ত্র দিয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “৭৫ সাল থেকে যত দূর সম্ভব ৮৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতি রাতে কার্ফিউ ছিলো। এটি হয়তো অনেকের স্মরণ নেই। অনেকে বলে জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র দিয়েছে। আমরা এটিকে কার্ফিউ গণতন্ত্র বলি। এ সময় ধনীক শ্রেণি গড়ে ওঠে। গরীব আরো গরীব হয়েছে। ৭৫ এর আগে কেউ আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়নি।”
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ৪১৮ দিন সংসদ বসেছে। সেখানে বিরোধী দল মাত্র ১৭/১৮ দিন ছিলো। আর বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া মাত্র আটদিন ছিলেন। এর বেশি থাকেনি।”
দেশ শান্ত থাকলে, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের জন্য কাজ করলে একটি বিশেষ মহলের জ্ঞানের দরজা খুলে যায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এ নির্বাচনের পর আমরা সরকার গঠনের পর দেশের যে আমরা শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছি। দেশ আবার উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে কোন কোন মহলের বিশেষের যেন এটাই পছন্দ না। তাদের কান্না ওই জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসী স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির জন্য।”
উপজেলা নির্বাচনের সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “অনেকে এত কথা বলেন, এত পরামর্শ দেন, এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে নানা কথা বলার চেষ্টা করেন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের আগে থেকে বিএনপি-জামায়াত মিলে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর ওপর অত্যাচার করেছিলো, তখন তাদের মুখগুলো কোথায় ছিলো? কোনো কথা বলেনি। তখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথাও তারা বলেনি, তখন যে নির্বাচন ঠিকভাবে হয়নি সেকথাও বলেনি। মনে হচ্ছে, তাদের চেতনা তখন অসার হয়ে গিয়েছিলো। তাদের জ্ঞান লোপ পেয়ে গিয়েছিলো। আমার মনে হয়, তারা জানে বিএনপির নামে কথা বললে ওই তারেক জিয়ার হাতে মাইর খাইতে হবে।”
সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, লতিফ সিদ্দিকী, মাহবুবুল-উল আলম হানিফ প্রমুখ।