নগরীতে পরীক্ষামূলকভাবে আলাদা লেনে চলছে রিকশা

যানজট নিরসনের একের পর এক অসফল উদ্যোগের পর সর্বশেষ আলাদা লেনে রিকশা চলাচল করা উদ্যোগ নেয় সিলেট সিটি কর্পোরেশন। নগরীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণস্থানে পরীক্ষামূলকভাবে আলাদা লেনে রিকশা চলাচলের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এজন্য রাস্তার দু’পাশে রেলিং ও পিলার দিয়ে আলাদা লেনও করা হয়। মূলত টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে যানজট নিরসনের উদ্যোগ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এটি কার্যকর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে নগরীর সড়কগুলো অপ্রশস্ত হওয়ায় সব গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এ ব্যবস্থা গ্রহণে বেগ পেতে হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই পৃথক লেন পদ্ধতি চালু করায় গত কয়েকদিন ধরে যানজট কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। তবে রিকশাচালকরা লেন পদ্ধতি এখনো যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় অনেক ক্ষেত্রে দেখা দিচ্ছে বিপত্তিও। ফলে রিকশাচালকদের এ ব্যাপারে সচেতন করতে প্রচারণা চালানোরও দাবি জানিয়েছেন অনেকে। সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানা যায়, গত কয়েক বছরে সিলেট নগরে ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোরিকশা, ইজিবাইক, রিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। সেই তুলনায় প্রশস্ত করা হয়নি রাস্তাঘাট। ফলে নগরীতে দেখা দিতে শুরু করে যানজট। দিনেদিনে নগরীর যানজট অসহনীয় পর্যায়ে গিয়ে পৌঁচেছে।

যানজট নিরসনে অতীতে ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও এসব উদোগ থেমে যায় মাঝপথেই। ফলে হ্রাস পায়নি যানজট। আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে নগরীর অসহনীয় যানজটের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। যানজট নিরসনে করণীয় নির্ধারনে চলতি মাসের শুরুর দিকে সওজ, ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের সাথে বৈঠক করে সিসিক। এ বৈঠকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি লেনে বিভক্ত করে যানবাহন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী গত ২ মার্চ থেকে নগরের সিটি পয়েন্ট থেকে সুরমা পয়েন্ট পর্যন্ত রাস্তায় দড়ি টেনে তিনটি লেনে বিভক্ত করা হয়। রিকশা যাওয়া-আসার জন্য দুটি লেন ও গাড়িসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের জন্য অপর লেন করা হয়। এই সড়কে লেন পদ্ধতিতে সাফল্য পাওয়ায় নগরীর ভিআইপি সড়ক হিসেবে পরিচিত চৌহাট্টা-রিকাবীবাজার সড়কে দাগ টেনে লেন পদ্ধতি চালু করা হয়।

লেন পদ্ধতি চালু করার কারণে যানজট কিছুটা কমতে শুরু করেছে বলে দাবি করেছেন নগরীর অনেক বাসিন্দা। তবে চালকদের অনেকেই লেন না মেনে আগের মতোই যানবাহন চালানোয় অনেক ক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হয়ে যাচ্ছে বলেও জানান অনেকে। এই বিপত্তি ঠেকাতে চালকদের লেন পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন করে তোলার দাবি জানান তারা।

নগরীর ব্যাটারি চালিত রিকশাচালক সুহেল মিয়া বলেন, লেন হওয়ায় মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কারের জন্য সুবিধা হয়েছে। কিন্তু রিকশার জন্য কোনো লাভ হয়নি। কারণ নগরীতে অন্যান্য যানের চেয়ে রিকশা কয়েকগুন বেশী চলাচল করায় রিকশা লেনে সবসময় জট লেগেই থাকে। আর অন্য গাড়ির জন্য লেনটি প্রায় ফাঁকা থাকে।

প্রাইভেট কার চালক আসকর আলী বলেন, আলাদা লেন হওয়ায় যানজট কিছুটা কমেছে। আসা যাওয়ার জন্য আলাদা লেন করে দেওয়ায় দুর্ঘটনাও কমবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটেও আটকে থাকতে হবে না।

সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সওজ ও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহযোগীতায় কয়েকটি সড়কে লেন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে সুফল পাওয়া গেলে পরবর্তীতে নগরের অন্যান্য সড়কে ওই পদ্ধতি চালু করা হবে। তিনি সকল চালককে লেন পদ্ধতি অনুসরণ করার আহ্বান জানান।

x