জিয়াকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলায় বিএনপির সমালোচনা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন,‘ মেজর জিয়া ছিলেন পনের আগস্ট হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য নায়ক। মার্শাল ল দিয়ে তিনি দেশের সপ্তম রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন, মানুষের ভোটে নয়। এ ধরণের বিতর্কিত ব্যক্তিকে ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’ বানানোর স্বপ্ন দল হিসেবে বিএনপির নোংরা মানসিকতাকে তুলে ধরে।’
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় নগরীর লালদিঘি মাঠে স্বাধীনতা মেলার আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন,‘সারা বিশ্ব জানে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার ঘোষক বিতর্কে হাওয়া না পেয়ে বিএনপি এখন নতুনভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’
জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকরই নয়, দল হিসেবেও জামায়াত ইসলামীর রাজনীতিকে দেশে হারাম করা হবে। জামায়াত ইতোমধ্যেই যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এখন দলিল দস্তাবেজ দিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় এ দলটিকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছে, বাংলাদেশেও থাকবে। কিন্তু প্রতিটি দলকে হতে হবে অসাম্প্রদায়িক।’
স্বাধীনতা মেলা পরিষদ, চট্টগ্রাম আয়োজিত এ আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন জাসদের কার্যকরী সভাপতি মাঈনুদ্দিন খান বাদল এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় নেতা ইসমত কাদির গামা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু প্রমুখ।
গোলটেবিল বৈঠকের আহ্বান বাদলের:
অনুষ্ঠানে বিএনপি কর্তৃক জিয়াউর রহমানকে দেশের প্রথম রাষ্টপতি দাবির তীব্র সমালোচনা করেন মাঈনুদ্দিন খান বাদল।
তিনি এসময় বিএনপি নেত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন,‘আপনাদের দলেও অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছে। অলি আহমদ, শমসের মবিনের মতো অনেকেই মেজর জিয়ার সঙ্গে চট্টগ্রামে ছিলেন। তাদেরকে নিয়ে আসেন। দেশের সকল মানুষের সামনে খোলামেলা গোলটেবিল বৈঠকে প্রমাণ করি কে দেশের প্রধান রাষ্ট্রপতি। মিডিয়া থাকবে যেন সবাই সেই আলোচনা দেখতে পারে।’
তিনি বলেন,‘যদি গোলটেবিলে বসতে পারেন আসুন, যদি না পারেন তবে আবারো প্রমাণ হবে সমগ্র জাতির সঙ্গে আপনারা প্রতারণা করছেন। আর যাই করুন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করবেন না।’
মাঈনুদ্দিন খান বাদল বলেন,‘২৬ মার্চ সারাদিন জিয়া চট্টগ্রাম শহরেই প্রবেশ করেননি। বোয়ালখালিতে ছিলেন। ঘোষণা দিয়েছেন ২৭ মার্চ। তিনিই যদি ঘোষক হতেন তবে স্বাধীনতা দিবস ২৭ মার্চ হতো।’
বাদল বলেন,‘কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের ঘোষণা শোনা যেত ফেনী পর্যন্ত। আর জিয়ার ঘোষণাই যদি সব হতো তবে ঘোষণার একদিন আগে ২৬ মার্চ কুষ্টিয়ায় মেজর ওসমান, বরিশালে মেজর জলিল, গাজীপুরে জেনারেল শফিউল্লাহ, মৌলভীবাজারে সি আর দত্ত যুদ্ধ শুরু করেছিলেন কার আহ্বানে?’
তিনি বলেন,‘৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণেই প্রতিরোধের ঘোষণা ছিল। বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন, ২৫ মার্চের কালো রাতের মতো কিছু একটা হবে। তাই যার যা কিছু আছে তা নিয়ে মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন।’