পাসপোর্ট পেতে লাগবে না পুলিশ ভেরিফিকেশন!
পাসপোর্ট করতে আগামীতে আর পুলিশ ভেরিফিকেশনের (যাচাইকরণ) প্রয়োজন হবে না। ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট অফিস থেকে সংগ্রহ করা যাবে পাসপোর্ট।
পাসপোর্ট বিভাগের নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন বিভাগের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন বিষয়ক একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গওহর রিজভী।
বৈঠকে পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন বিভাগ এবং পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে পাসপোর্টে তৈরিতে ভেরিফিকেশনের বিরোধিতা করেন বেশিরভাগ কর্মকর্তা। তারা বৈঠকে পাসপোর্ট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন।
তবে এসবি পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা ভেরিফিকেশন বন্ধের বিরোধিতা করেন। তারা বলেন, পাসপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে ভেরিফিকেশন না থাকলে অসৎ লোকেরাও পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।
সূত্র জানায়, বৈঠকে উপস্থিত পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, সৎ হোক আর অসৎ হোক, পাসপোর্ট পাওয়া বাংলাদেশের একজন নাগরিকের অধিকার। যদি একজন নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার অধিকার থাকে, যদি ভোটাধিকার থাকে তবে তার বিনা শর্তে পাসপোর্ট পাওয়ারও অধিকার রয়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, পাসপোর্ট কোনো মানুষের চরিত্রের সনদপত্র নয়। এটাও জাতীয় পরিচয়পত্রের অংশ। পাসপোর্ট করার জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন একজন আবেদনকারীর জন্য হয়রানিস্বরূপ। তাই সবাইকেই ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট দেওয়া উচিত।
সূত্র আরও জানায়, প্রায় ঘণ্টাখানেক রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে গওহর রিজভী পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে নেওয়ার পক্ষে রায় দেন। তবে এজন্য কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা ভেরিফিকেশনের নামে পুলিশি হয়রানি, বিশেষ করে ঘুষ বাণিজ্য বন্ধে শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন।
সে সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমআরপি কর্তৃপক্ষের ভেরিফিকেশন ছাড়া পাসপোর্ট প্রদান প্রস্তাবের সঙ্গে ‘প্রচণ্ড দ্বিমত’ পোষণ করে চিঠি পাঠায় এসবি।
কর্তৃপক্ষের দেওয়া প্রস্তাবটি সরকারের নীতি পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করে তারা। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি প্রাথমিকভাবে এমআরপি কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেছিল।