টেংরাটিলায় গ্যাস নির্গমন স্বাভাবিক
সুনামগঞ্জ: দেশের প্রাচীনতম গ্যাসক্ষেত্র সুনামগঞ্জের টেংরাটিলার পরিত্যক্ত গ্যাসক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে বুদবুদ বেড়ে যাওয়ায় এটি পরিদর্শন করেছেন বাপেক্স প্রতিনিধি দল।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় বাপেক্সের ভূতত্ত্ববিদ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদল টেংরাটিলা পরিদর্শন করেন।
প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন, বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব সারওয়ার, সিলেট গ্যাসক্ষেত্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমাম হোসেন ও সিলেট গ্যাসক্ষেত্রের মহাপরিচালক আমীর হোসেন।
এ সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও প্রযুক্তি) আহমেদ উল্লাহ, দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান, সুরমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টার উপস্থিত ছিলেন।
ভূতত্ত্ববিদ মিজানুর রহমান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, এখানে মূলত গ্যাস ও পানি নির্গত হওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক। তবে স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে হবে। গ্যাস উদগীরণের বিষয়টি এখন থেকে নিয়মিত মনিটরিং করবে বাপেক্স।
গ্যাসক্ষেত্রটি সচল ও বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, পরিদর্শনকালে প্রতিনিধিদল গ্যাসক্ষেত্রের ভেতরে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর টেংরাটিলায় আসার পর আতঙ্কিত এলাকাবাসী তাদের ঘিরে ধরে অবিলম্বে টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ড সচল করতে ও বিপদজনক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার দাবি জানায়। একপর্যায়ে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে বাপেক্স প্রতিনিধিদল। পরে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় তারা পরিদর্শন শেষ করেন।
দোয়ারাবাজারের ইউএনও মো. কামরুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, টেংরাটিলায় ফের বুদবুদ বেড়েছে এমন সংবাদে বাপেক্স প্রতিনিধিদল গ্যাসক্ষেত্র ও সংলগ্ন গ্রাম পরিদর্শনে আসেন।
এর আগে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন দু’দফা বিস্ফোরণে গ্যাসক্ষেত্রের প্রোডাকশন কূপের রিগ ভেঙে প্রচণ্ড গর্জন এবং ভয়াবহ কম্পনসহ ২০০ থেকে ৩০০ ফুট পর্যন্ত ওঠা-নামা করতে থাকে আগুন। দুই দফা বিস্ফোরণে গ্যাসফিল্ডের মাটির উপরে ৩ বিসিক গ্যাস পুড়ে যাওয়া এবং ৫ দশমিক ৮৯ থেকে কমপক্ষে ৫২ বিসিক গ্যাসের রিজার্ভ ধ্বংস হওয়াসহ আশপাশের টেংরাটিলা, আজবপুর, গিরিশনগর, কৈয়াজুরি ও শান্তিপুরের মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও পরিবেশের ক্ষতি হয়। বিস্ফোরণের পর আশপাশের মানুষের সামান্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে কিছুদিন পরই নাইকো তাদের সব সরঞ্জামাদি নিয়ে টেংরাটিলা থেকে চলে যায়।