নতুন প্রজন্মকে সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট করতে হবে

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের পুরোনো ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট করতে হবে। নতুনদের আকৃষ্ট করতে হলে যুগোপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি অপসংস্কৃতি যেন ঘাড়ে চেপে না বসে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে যুগে নতুন অনেক প্রযুক্তি এসেছে। সব কিছুই এখন ডিজিটাল। আমাদের সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রেও পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। পুরোনো ঐতিহ্য আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। শুধু পুরোনো জিনিস ধরে রাখবো, সামনে এগুবো না, এই চিন্তাটা বাদ দিতে হবে। এ চিন্তা আমাদের এগুতে দেবে না। নইলে সেই ‘জলসা’ ঘরের মতো আস্তে আস্তে সব ধ্বসে ধ্বসে পড়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা সব সময় আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যে জয় বাংলা স্লোগান বলি, এটা তো নজরুলের।’ এটা হয়তো অনেকে জানেন না বলেও উল্লেখ করেন করেন তিনি।

‘আমাদের ঐতিহ্যগুলোকে সংরক্ষণ করেই আমাদের আধুনিকায়নের দিকে যেতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে যেতে হবে। কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ওয়েবপোর্টাল ব্যবহার করছে আমাদের ছেলে-মেয়েরা। এসব প্রযুক্তির মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের কাছে সংস্কৃতিকে সহজে পৌঁছে দিতে হবে।’ তাদের জন্য সে সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সাংস্কৃতিক গবেষণার ওপর জোর দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশজ সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হবে। দেশজ সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে সামনে নিয়ে আসতে হবে।’

সাংস্কৃতিক বিকাশের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের দেশ। কিন্তু শুধু পেটের ক্ষুধা মেটালে হবে না। মনের ক্ষুধাও মেটাতে হবে। সংস্কৃতি-সাহিত্য চর্চা মানুষের মনের খোরাক যোগায়। সংস্কৃতি চর্চা মানুষের মনকে আরো বিকশিত করে।’

সংস্কৃতির বিকাশে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষের পেটে খাবার নিশ্চিত করতে পেরেছি। এখন আর খাদ্যের জন্য হাহাকার নেই। আমরা মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। আমরা সাংস্কৃতিক বিকাশের লক্ষ্য নিয়েও কাজ করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতিকেও ধরে রাখার পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘এসব সংস্কৃতিকে হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না।’ সংস্কৃতি একটি জাতির অস্তিত্বকে ধরে রাখে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, শিল্পচার্য জয়নুল আবেদীন, পল্লী কবি জসিম উদ্দীনসহ বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিক ও শিল্পীদের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সচিব ড. রনজিৎ কুমার বিশ্বাস ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

x