খালেদা জিয়া নিশা দেশাইয়ের নেশায় মগ্ন হয়ে ক্ষমতার স্বপ্ন দেখছেন
সুনামগঞ্জ: আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এমপি বলেছেন, মেজর জিয়া বাংলাদেশে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান কায়েম করতে চেয়েছিলেন। সেই মিশন নিয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের খুন করেছেন।
সোমবার বিকেল ৩টায় সুনামগঞ্জের দিরাই বিএডিসি মাঠে দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সুনামগ্ঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মতিউর রহমান।
দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি আরও বলেন, ৭৫’ পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান তেলে আর জলে এক করতে চেয়েছিলেন। সেই থেকেই জিয়া বাংলাদেশে বিভক্তির রাজনীতি সৃষ্টি করে দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করেন।
‘খালেদা জিয়া আন্দোলনের নামে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা করছেন’ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, খালেদা যুদ্ধাপরাধীদের হাতে পতাকা তুলে দিয়ে দেশের স্বাধীনতাকে কলংকিত করেছেন। দেশ ও জাতির এই কলঙ্ক মুছতে যুদ্ধাপরাধীদের যখন ফাঁসির রায় হচ্ছে, দেশ-বিদেশে যখন ফাঁসির রায়ের প্রশংসা হচ্ছে, খালেদা জিয়া তখন মানবতা বিরোধী অপরাধীদের ফাঁসির রায় নিয়ে কোন কথা বলছেন না। তিনি পড়েছেন উভয় সংকটে। রায়ের পক্ষেও বলছেন না, আবার বিপক্ষেও না।
সুরঞ্জিত সেন আমেরিকার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিশা দেশাইকে ‘বালিকা মন্ত্রী’ উল্লেখ করে বলেন, আমেরিকার কথায় চললে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।
বাংলার মানুষ তাদের সপ্তম নৌবহর দেখেছে, বাঙ্গালীকে কেউ দমাতে পারেনি। খালেদা জিয়া নিশা দেশাইয়ের নেশায় মগ্ন হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তাতে কোন লাভ হবেনা। দেশে নির্বাচন হবে, কারো কথায় নয়, সাংবিধানিক ভাবেই হবে। আওয়ামীলীগ অবশ্যই নির্বাচন চায়, আওয়ামীলীগ কোন দিন অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় আসে নাই। বিএনপিকে জামায়াত ছেড়ে, সহিংসতা ছেড়ে, গণতান্ত্রিক দল হিসেবে প্রমাণ করতে হবে, তাহলেই আলোচনা হতে পারে।
‘দেশে গণঅভ্যুত্থান হবে’ বিএনপির মহাসচিবের এমন বক্তব্যে প্রতিক্রিয়ায় সুরঞ্জিত সেন বলেন, গণঅভ্যুত্থান মানে ওরা কি বুঝবে, কম বয়সী নেতা বলে ফলেছেন এ আরকি! গণঅভ্যুত্থান দেশে একবারই হয়েছে, তা ৭৯ এ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা করেছি।
জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ওয়ান ইলিভেনের সময় যখন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়া করেছিল, তখন কোন কোন সিনিয়র নেতা তাকে মাইনাসের ফর্মুলা দিয়েছেন। সে দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের আন্দোলন সংগ্রামের ফলে শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন।
মিসবাহ সিরাজ বলেন, সিলেটের প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দকে সুসংগঠিত করে আগামীতে সিলেট বিভাগের ১৯ টি আসন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়া হবে, সেই লক্ষ্য নিয়ে আওয়ামীলীগ পরিবার সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
মিসবাহ সিরাজ আরো বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষজ্ঞ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য উত্তসুরি সজিব ওয়াজেদ জয় কাজ করে যাচ্ছেন। তার নেতৃতত্বে আগামীতে তরুণ সমাজের কর্মসংস্থান হবে। এ তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজ দেশের মানুষ বিশ্বের যে কোন প্রান্তে অতিসহজে যোগাযোগ করতে পারছেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় ও আওয়ামীলীগ নেতা অভিরাম তালুকদারের যৌথ পরিচালনায় সভায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা মুকুট, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদস সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শামছুননাহার বেগম শাহানা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আতাউর রহমান, সিলেট মাহানগর আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামছুল ইসলাম, দিরাই পৌর মেয়র আজিজুর রহমান বুলবুল, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক রঞ্জন রায়, উপজেলা স্বেচ্ছা সেবক লীগের সভাপতি শাহাজাহান সরদার, পৌর যুবলীগের সভাপতি এনামুল হক, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফজলে রাব্বি স্বরণ, দিরাই উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ রহমান প্রমুখ।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আপ্তাব উদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা অ্যাডভোকেট দিলীপ কুমার দাস, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সম্পাদক এডভোকেট নান্টু রায়, প্রচার সম্পাদক হায়দার চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা সিরাজুর রহমান সিরাজ, আমির হোসেন রেজা প্রমুখ।