শীতে ভাল থাকুন
শীতকাল মানেই গুটিসুটি মেরে লেপ-কম্বলের তলায় ঢুকে থাকার সময়। এ সময় যেন আর শেষই হতে চায় না। কিন্তু এবারের শীতের রেজিলিউশনটা না হয় একটু অন্যরকম হোক।
আশেপাশের বাড়ি থেকে বন্ধু, সহকর্মী সবাই যখন শীতে জবুথবু হয়ে বসে রয়েছে, তখন আপনি নিজেকে রাখুন চাঙ্গা, ফুরফুরে, সবার থেকে আলাদা। কিন্তু এতখানি পড়েই নিশ্চয়ই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। ভাবছেন তো শীতের লেথার্জি কাটাবেন কী করে? চিন্তা নেই মুশকিল আসানে আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি বাছাই করা সেরা কয়েকটি টিপস-
১.শীতকালে অনেকেরই সিজিনাল ডিপ্রেশন হয়। মানে শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুড অফ হয়ে যাওয়া, সবকিছুতে ভালো না লাগা। তাই এসময় চেষ্টা করুন মন থেকে সবরকমের নেগেটিভ ভাবনা সরিয়ে পজিটিভ ভাবনাচিন্তা করতে। শীতের মিঠে রোদ, দারুণ খাওয়া দাওয়া, পার্টি, হইচইকে এনজয় করুন, অফিস আর বাড়ির হাজারও ঝামেলাকে দূরে সরিয়ে রেখে।
২.শীতে দিনের আলো তাড়াতাড়িই শেষ হয়ে যায়। সূর্যালোক প্রভাবিত করে আমাদের মস্তিষ্কের অন্যতম নিউরোট্রান্সমিটার সেরাটোনিন নিঃসরণকে। এই সেরাটনিন আমাদের মুড ভালো বা খারাপ থাকার জন্য দায়ী। তাই চেষ্টা করুন বেশিক্ষণ সূর্যের আলোতে থাকতে। সেরাটনিন নিঃসরণের মাত্রা ঠিক থাকবে৷ আর আপনিও বিন্দাস।
সকালে বাড়ির দরজা-জানালা খুলে, পর্দা সরিয়ে দিন। যত বেশি সূর্যের আলো ঘরে ঢুকবে ততই দেখবেন নিজের মধ্যেই একটা ফিল গুড ব্যাপার আপনি বুঝতে পারছেন। বাড়িতে সন্ধেবেলা নীল এলইডি আলো জ্বালিয়ে রাখুন। মুড ভালো রাখতে অব্যর্থ দাওয়াই।
৩.সূর্যের আলোতে বেশিক্ষণ থাকলে শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণে ভিটামিন ডি তৈরি হয়, যা আপনার শারীরিক ও মানসিক বিকাশের পক্ষে সহায়ক৷ আর এরকম ঝকঝকে শীতের দিনে কার পক্ষেই বা বেশিক্ষণ ডিপ্রেসড হয়ে বসে থাকা যায়?
৪.ইদানীং মেট্রো শহরগুলিতে এমন কিছু জিম রয়েছে যেখানে এক্সারসাইজের সঙ্গে সঙ্গে লাইট থেরাপি-র মাধ্যমে মেডিটেশনও করানো হয়। সকাল হোক বা সন্ধ্যে-একবার যদি লেপের তলা থেকে বেরিয়ে জিমে পৌঁছতে পারেন, তাহলে শীতের ডিপ্রেশন আপনাকে ছুঁতে পারবে না।
৫.শীতে আমরা গরমকালের তুলনায় ওয়ার্কআউট প্রায় ১০ শতাংশ কমিয়ে দিই। এটা কিন্তু আমাদের শরীর আর মন কোনোটার পক্ষেই ভালো নয়। ব্যায়াম, হাঁটাচলা, কাজকর্ম-যাই হোক না কেন, বাইরে ঠান্ডা পড়েছে এই অজুহাতে সবকিছু কমিয়ে দিলে অবশেষে সমস্যা আপনারই।
বাইরে জিম করতে যেতে না পারলে বাড়িতেই কিছুটা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ বা যোগাসন করুন। কিংবা বিকেলে পার্কে হাঁটুন। মনে রাখবেন মোবাইলে খোশগল্প করতে করতে হাঁটা নয়, ব্রিস্ক ওয়াকিং। তবেই না উপকার পাবেন। শরীর থাকবে ঝরঝরে।
৬.ক্যাফিনযুক্ত খাবার যথাসম্ভব বর্জন করুন৷ অনায়াসেই নিজেকে স্ট্রেস ফ্রি রাখতে পারবেন। খাদ্যতালিকায় মরসুমি ফল, সব্জি রাখুন। প্রতিদিন অন্তত তিন লিটার করে জল খান। যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন অ্যালেকাহল আর ধূমপান। স্মুদি, স্যালাড, ফ্রুট স্যালাড, স্প্রাউটস রাখুন ডায়েটে।
৭.দিনের কিছুটা সময় সমস্তরকম টেনশন দূরে হটিয়ে শুধুমাত্র নিজের জন্য রাখুন। নিজের হবির জন্য। হতে পারেতা স্ক্র্যাপবুক তৈরি বা বাড়ির জন্য কুকিজ বানানোর এক্সপেরিমেন্ট করা। চেষ্টা করুন নতুন হবি খুঁজে বের করতে। জীবনটা খুবই ছোট৷ চেষ্টা করুন প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করতে।
আবহাওয়া খারাপ আর মুড নেই-এর চিরাচরিত গণ্ডি থেকে বেরিয়ে এসে একবার দেখুন। হলফ করে বলতে পারি এই শীতকালটা আপনার জন্য দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠবে।
(মডেল: ফারজিয়া হক ফারিন)