সরকারের উদাসীনতায় সুন্দরবনে মহাবিপর্যয়

ঢাকা: সুন্দরবনে ট্যাঙ্কারডুবির ঘটনায় সরকারের উদাসীনতা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে মহাবিপর্যয় নেমে এসেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। সুন্দরবনের ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এই অভিযোগ করা হয়।

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও তদন্ত কমিটির আহবায়ক মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘বনবিভাগ প্রাথমিকভাবে ১০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা করলেও অনেকের ধারণা ক্ষতি ৫০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। তবে পরিবেশবাদীদের মতে সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্যের ক্ষতি অপূরণীয় যা টাকার অংকে পরিমাপ করা যাবে না।’

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সুন্দরবন রক্ষার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ উদাসীন, নৌপথ ও অভয়ারণ্য রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো সমন্বিত নীতিমালা নেই। জাহাজ ডুবির পর বনবিভাগ ও নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের বিপরীতমুখী বক্তব্যের ফলে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের চরম অদক্ষতা ও পারস্পরিক অহযোগিতা দৃশ্যমান হয়েছে।

প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, ‘ট্যাঙ্কারডুবির ৪৮ ঘণ্টা পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্ধার কার্যক্রম ও জরুরি ভিত্তিতে তেল অপসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শ্বাসমূলীয় বন ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল সুন্দরবনের উপর নেমে আসে মহাবিপর্যয়।’

বিএনপির তদন্ত কমিটির দাবি, দূর্ঘটনার পর নৌবাহিনী কিংবা কোস্ট গার্ডকে তেল অপসারণের কাজ দিলে ক্ষতি অনেকটা কমিয়ে আনা যেত। বনের ভেতরে ও নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেলের সামান্য পরিমাণই উদ্ধার করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে বিএনপির তদন্ত প্রতিবেদনে। সুন্দরবন রক্ষায় শ্যালা নদী ও সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌ চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধ করাসহ ছয়টি সুপারিশও করেছে বিএনপির তদন্ত কমিটি।

তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মেজর (অব.) হাফিজের নেতৃত্বে বিএনপির তদন্ত দলে আরো ছিলেন দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মনজু, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, খুলনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মনা, সেভ দ্য সুন্দরবনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম ও বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম চৌধুরী।

x