সমাবেশ হবেই, জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি
ঢাকা: প্রশাসনের অনুমতি না পেলেও আগামী ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করবে বিএনপি। শুক্রবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
মূলত এ সিদ্ধান্ত জানানোর জন্যই আজ জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে রিজভী সমাবেশ করার ব্যাপারে বিএনপির অটল অবস্থানের কথা জানিয়েছিলেন। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে সে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হলো।
গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া ৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ ঘোষণা করে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ওই দিন সারা-দেশে সভা-সমাবেশ ও কালোপতাকা বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। একটি কেন্দ্রীয় সমাবেশও করবে বিএনপি।
সমাবেশের অনুমতি দিতে সরকার টালবাহানা করছে অভিযোগ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘প্রশাসন অনুমতি না দিলেও যে কোনো মূল্যে ৫ জানুয়ারি রাজধানীতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হবে।’
সরকার বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি দেবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘আমাদের সমাবেশ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, যা পূর্ব ঘোষিত একটি কর্মসূচি। আশা করি ক্ষমতাসীন সরকার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপিকে ৫ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি দেবে।’
সমাবেশের অনুমতি না পাওয়া গেলে কী করবে বিএনপি এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘সভা সমাবেশ করা গণতান্ত্রিক অধিকার। কাজেই আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকা সরকার ৫ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি না দিলেও যেকোনো মূল্যে আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবোই।’
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে ‘পাষণ্ড রাজাকার’ এবং ‘মিথ্যার গুরু’ আখ্যা দিয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্ররোচনায় এই রাজাকার নানা কথা বলে বেড়াচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে যারা পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরে এসেছিলেন তাদের বিচারের ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যন ছিলেন এরশাদ। তাহলে তিনি তো অন্যতম রাজাকার।’
রিজভী বলেন, ‘এখন তো দেখা যাচ্ছে যারাই বিএনপিকে নিয়ে কুৎসা রটাবে তারাই আওয়ামী লীগের বড় দোসর। যদি টিক্কা খানও হন তাকেও আওয়ামী লীগ দোসর বানাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহীন, আব্দুল লতিফ জনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল রাত সাড়ে ১১টায় রিজভী আহমেদ বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমি বলেছি, প্রশাসন আমাদের অনুমতি না দিলেও ৫ জানুয়ারি ঘোষিত কর্মসূচি পালন করা হবে।’
সেদিনই ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র হত্যার ওই দিনটিতে ঢাকায় জনসভার অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে ইতোমধ্যেই আবেদন করেছি। আমাদের নেতারা আজ মহানগর পুলিশ দপ্তরে গিয়েছিলেন। তারা (পুলিশ) বলেছে, জনসভার অনুমতি দেবে না। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, ৫ জানুয়ারি আমাদের কর্মসূচি করতেই হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে দলের প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল জনসভার বিষয়ে কথা বলতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কার্যালয়ে যান। কমিশনারকে না পেয়ে তারা সহকারী কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেন। কমিশনার গোপালগঞ্জে গেছেন। তিনি ফিরলেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে বলে বিএনপির প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে।