নয়াপল্টনের সব রাস্তাই এখন বন্ধ

ঢাকা: রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় ‍কার্যালয়ের সামনেসহ পুরো এলাকার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। পল্টনের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে শুরু করে বিজয়নগর ও ফকিরাপুল পর্যন্ত পুরো এলাকার রাস্তা লোহার ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে।
পুরো এলাকায় গাড়ি ও লোক চলাচলপুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

রোববার (৪ জানুয়ারি) রাত পৌনে দশটারদিকে পুলিশ এ ব্যবস্থা নেওয়ায় পুরো এলাকাজুড়ে ভীতিকর অবস্থা বিরাজকরছে।

বিপুল সংখ্যকআইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনও বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে রেখেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া এ মুহূর্তে এ এলাকায় কোনো মানুষজননেই। পল্টন থানার ওসি গোলাম মোর্শেদ বাংলানিউজকে জানান, নিরাপত্তারস্বার্থেই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এ অবস্থা শুরু হয়েছে অবশ্য শনিবার (০৩ জানুয়ারি) দিনগত রাত পৌনে ১২টারপর থেকেই। সে সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিবরুহুল কবির রিজভীকেপুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর থেকেই নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয় জনশূন্য হয়ে পড়েছে।

গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অসুস্থ অবস্থায় রিজভীকে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাকে নেওয়ার পরপরই নয়াপল্টন কার্যালয়ে অবস্থান করাঅফিস স্টাফদের বের করে দেয় পুলিশ।

এদিকে, রিজভীকে হাসপাতালেপাঠানোর পর থেকেই নয়াপল্টন কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীরাভিড় করতে থাকেন। প্রতি মুহূর্তে বিভিন্ন ঘটনার সংবাদ তারা গণমাধ্যমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন।
বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের অতন্দ্র প্রহরী এখন শুধু সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

এ পরিস্থিতিতে রোববার রাত দশটা পর্যন্ত কোনো নেতাকর্মী দলীয় কার্যালয়ের আশপাশেও ঘেঁষেননি। এমনকি আসেননি কোনো অফিস স্টাফও। তবে শনিবার রাতে রিজভীকে নিয়ে যাওয়ার পর নয়াপল্টন কার্যালয়ে তুষার নামে এক অফিস স্টাফ আটকাপড়েন। পরে রোববার সকাল১০টার দিকে পুলিশ তাকে বের করে দেয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজয়নগর,নাইটিঙ্গেল ও ফকিরাপুল মোড়ে পুলিশের এপিসি কারদিয়ে ব্যারিকেডও অব্যাহত রয়েছে। তবে নয়াপল্টন এলাকায় কাউকে আসতে দেওয়া হচ্ছে নাবলে অভিযোগ করেছেন দলটিরনেতাকর্মীরা।

এ অবস্থায় রোববার সন্ধ্যার পর নয়াপল্টনের মসজিদ গলিতে পরপর দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটলে আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

নেতাকর্মীশূন্য নয়াপল্টন কার্যালয়েও ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি।

সোমবার (৫ জানুয়ারি) ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’পালনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আওয়ামী লীগ রাজধানীর ১৬টি স্পটসহ সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পযায়ে বিজয় র্যালি ও সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। অন্যদিকে ৫ জানুয়ারিকে‘গণতন্ত্র হত্যাদিবস’ ঘোষণা করে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের পাশাপাশি সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি নেয় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

পাল্টাপাল্টি এ কর্মসূচির কারণে রাজধানীতেরোববার (৪ জানুয়ারি) বিকেল ৫টা থেকে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিট্রন পুলিশ (ডিএমপি)। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

সোমবারের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে শনিবার (৩ জানুয়ারি) রাত থেকে খালেদা জিয়া তার গুলশানরাজনৈতিক কার্যালয়ে রয়েছেন। এ কার্যালয়ের সামনেও অতিরিক্ত পুলিশ থাকা এবং খালেদাকে বাইরে বের হতে না দেওয়া বা ভেতরে কাউকে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনায় বিএনপি বলছে, খালেদাকে ‘অবরুদ্ধ’ রাখা হয়েছে।

x