ওল্ডহামে কিছু স্মৃতি: বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও প্রথম বিজয় দিবস পালন (৩)
ইংল্যান্ডের বড় এক শহর ওল্ডহাম। পুরো এলাকাজুড়ে আছেন অনেক বাঙ্গালী, যারা প্রবাসে বসেও দেশকে নিয়ে ভাবেন প্রতিমুহূর্তে। ওল্ডহামে বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও বিজয় দিবস পালন নিয়ে প্রবাসী আব্দুল মালিক স্মৃতিচারণ করে লিখেছেন সুনামগঞ্জ মিরর ডটকমে। আমাদের প্রিয় পাঠকদের জন্য আজ থাকছে এর তৃতীয় পর্ব।
————————————————————–
পরবর্তী সভা ৭ই সেপ্টেম্বর ১৯৯১ইং শনিবার দুপুর ২ টায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় এই প্রথম বারের মত ওল্ডহামে মহান বিজয় দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরবর্তি সভা ৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৯১ইং শনিবার দুপুর ২ টায় অনুষ্ঠিত হয় এবং সংবিধানের উপর বেশ পরিবর্তন আনা হয়। ফুটবল প্রতিযোগিতার তারিখ পরিবর্তন করে ৬ই অক্টোবর থেকে ২০শে অক্টোবর করা হয় এবং ধারণ করা হয় কমপক্ষে ২০টি দল অংশগ্রহণ করবে। এতে ওল্ডহাম সহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরের সর্বমোট ১৩টি দল অংশগ্রহন করে। দলগুলি হচ্ছে, আবাহনী, বি এফ বয়েস, ইমপ্রেস অফ ইন্ডিয়া, নুরজাহান, সাউথ পোর্টস, ব্রাদাস ইউনাইটেড, গ্লড উয়িক পোল, কিগলী বয়েস, ও বি ওয়াই এ, সেভেন স্টার, শাহজালাল ও সুরমা দল। এতে বিজয়ী ছিলেন সাউথ পোর্টস এবং রানার আপ গ্লডউয়িক। টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা ২৭শে অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে এবং ব্যেডমিন্টন প্রতিযোগিতা ৩রা নভেম্বর অনুষ্টিত হবে। উভয় খেলা ওল্ডহাম বাংলাদেশ কালচারেল সেন্টারে অনুষ্টিত হবে।
উক্ত সভায় আমাকে প্রশ্ন করা হয়, বিজয় দিবস কি? বিজয় দিবস আমরা কিভাবে উদযাপন করতে পারি। এর কারণ এই কমিটির অধিকাংশ সদস্য (বর্ণ এন্ড ব্রটআপ) যুক্তরাজ্যে জন্ম এবং বড় হয়েছেন আর বাকি সকলই অনেক ছোট বেলাই ইংলেন্ডে এসেছেন, সুতারাং বাংলাদেশের ইতিহাস ও স্বাধীনতা সংগ্রাম তাদের জানা নেই। আমি সংক্ষিপ্ত ভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস তুলে ধরলাম। এ ছাড়াও বিজয় দিবস কিভাবে উদযাপন করা হয় এবং কি কি কর্মসূচী নিয়ে আমরা উদযাপন করব আলোচনা করলাম। সেই সাথে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিলাম। ম্যাগাজিন প্রকাশের জন্য বাংলা ফ্রন্ট শুধু মাত্র ওরিক ছাড়া আর কোথাও নেই। নুরুল আলী আমাকে বললেন, ওরিক সেন্টারে যাওয়া আসা এবং টাইপিং এ আমাকে সহ যোগিতা করবেন। বিজয় দিবসের উপর কিছু লেখা এবং কবিতা দিয়ে ম্যাগাজিন প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমি ম্যাগাজিনের নাম নির্ধারণ করলাম, “নবজাগরণ” (নিউএরা) এটাই ছিল ওল্ডহামের সর্বপ্রথম একটা বাংলা ম্যাগাজিন।
উক্ত সভায় মহিলা সদস্য শেলী রাহমান ইস্টার্ন ফ্যাশন মিউজিকেল নামে একটি অনুষ্ঠান তিনি আয়োজন করেছেন বলে জানান। তিনি অনুষ্ঠানের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন এবং সকলকে সহযোগিতা করার আহবান জানান।
পরবর্তী সভা ২রা নভেম্বর ১৯৯১ইং শনিবার আবার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বিজয় দিবসের সম্পুর্ন প্রোগ্রাম সাজানো হয় এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আগামী ২২শে ডিসেম্বর রোববার দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২০তম ঐতিহাসিক বিজয় দিবস অনুষ্ঠান ওল্ডহাম বাংলাদেশ কালচারেল সেন্টারে পালন করা হবে। ৭ই ডিসেম্বর শনিবার ওল্ডহাম বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের সভা ওল্ডহাম বাংলাদেশ কালচারেল সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সভায় আমি সবাইকে নিয়ে বিজয় দিবসের প্রোগ্রাম সাজাইলাম। অনুষ্ঠানের সভাপতি থাকবেন ইয়ুথ এসোসিয়েশনের চেয়্যারমেন আব্দুল করিম। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জাতীয় সংগীত, শহীদ স্মরণে এক মিনিট নিরবতা, শেরেবাংলা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে থাকবে গান, কবিতা আবৃতি ও নাটক। শেরেবাংলা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পুরষ্কার বিতরণ করবেন আলহাজ মবশ্বির খাঁন ( প্রাক্তন সভাপতি ওল্ডহাম বাংলাদেশ এসোসিয়েশন) এবং আলহাজ সমুজ মিয়া (সভাপতি অল্ডহাম বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ও হেডমাস্টার শেরেবাংলা প্রাইমারী স্কুল)।
সব শেষে উপস্থিত সকলের জন্য রিফরেশমেন্ট। এর পরের দিন থেকে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরকে কবিতা, গান ও নাটক রিয়ারছেল শুরু করলাম। নাটক তৈরি করতে সমস্যায় পড়ে গেলাম, কারণ কোন ছাত্র বা ছাত্রী অভিনয় করতে চায় না। সব শেষে আমার ভাতিজা আলী হায়দার এবং ভাগনা আমিনুলকে এক ধরনের জোর করে একটি কৌতুক নাটক বানাইলাম। আর এই নাটকটাই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দিয়েছিল। অনুষ্ঠানের আগের দিন বিকাল বেলায় স্টেইজ সাজাতে লাগলাম এবং স্টেইজের টিক পিছনে কাপড় দিয়ে স্মৃতিসৌদ তৈরি করলাম।
২২শে ডিসেম্বর রবিবার হল ভর্তি মানুষ, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান ছিল অত্যান্ত প্রানবন্ত। অনুষ্ঠান সাজিয়েছিলাম ভিন্ন প্রক্রিয়ায় যাতে একজন ছোট বাচ্চাও যেন বিরক্তিবোধ না করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ওল্ডহাম বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশনের চেয়্যারমেন আব্দুল করিম। প্রধান অতিথি বাংলাদেশ থেকে আগত জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দলের নেতা ড. সাঈদুর রাহমান খাঁন, প্রধান বক্তা আমি (আব্দুল মালিক) ও মহিলা এসোসিয়েশনের সভাপতি শরিফা বেগম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মোজাহিদ খাঁন এবং রহিমা বেগম।
এই প্রথমবারের মত ওল্ডহামে মহান বিজয় দিবস পালন করা হয়। এতে ওল্ডহাম সহ বিভিন্ন শহর থেকে বহু গন্য মান্য ব্যাক্তি, সমাজসেবক ও রাজনৈতিক ব্যাক্তি বর্গ সহ সর্বস্তরের মানুষের সমাগম ঘটে। অনষ্ঠানকে সব চেয়ে বেশি প্রাণবন্ত করে রাখে শেরে বাংলা প্রাইমারী স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কবিতা আবৃতি, গান ও নাটক। প্রথম বারের মত একটি স্বরণিকা বাংলা এবং ইংলিশ এর সংমিশ্রনে “নব জাগরণ” প্রকাশিত হয়।
পরবর্তিতে ওল্ডহাম বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের সভা ১৯৯২ইং ৪টা জানুয়ারী শনিবার দুপুর ২টায় ওল্ডহাম বাংলাদেশ কালচারেল সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় প্রথম বারের মত পালন করা বিজয় দিবস অনুষ্ঠানের বিভিন্ন দিগ নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা করা হয়। সেই সাথে এই প্রথম বারের মত ওল্ডহামে মহান শহীদ দিবস ২১শে ফেব্রোয়ারী পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্বে এবার আমার সাথে সাইফুল আলম ও মোজাহিদকে দেওয়া হয়। এছাড়াও স্বাধীনতা দিবস পালন, বাংলা ক্লাস, বাংলা রেডিও অনুষ্টান, ওয়েষ্টউড ফোরাম ও ফুটবল টুনামেন্ট সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এই প্রথম বার ওল্ডহাম হস্পিটাল থেকে একটি বাংলা রেডিও চালু হয় এবং এতে প্রেজেন্টার আমি এবং আমার সাথে ছিলেন নুরুল আলী।
১লা ফেব্রয়ারী ১৯৯২ইং অল্ডহাম বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের সভা অনুষ্টিত হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, ২১শে ফেব্র্যারী রবিবার না থাকায় এক সপ্তাহ পিছিয়ে ১লা মার্চ শহীদ দিবস পালন করা হবে। প্রোগ্রামের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত, বক্তা ওয়াহিদুর রাহমান, সাদরুল ও লুসন। অতিথী আনুয়ারুল ইসলাম, শেরেবাংলা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কবিতা আবৃতি, নাটক ও গান। বক্তা আলহাজ মবশ্বীর খাঁন, কমপিউটার সার্টিফিকেট প্রজেকশন, প্রধান অতিথী বাংলাদেশের এসিস্টেন্ট হাইকমিশনার জনাব আহমেদ রহিম, ফুড সমাপ্তি। পরবর্তীতে আমি করিম ভাই, মোজাহিদ, সাইফুল ও ওয়াহিদুর রাহমান মিলে আবার নতুন ভাবে অনুষ্টান সাজাইলাম।
অনুষ্টানের সভাপতি থাকবে চেয়ারমেন আব্দুল করিম, প্রধান অতিথী বাংলাদেশের এসিস্টেন্ট হাইকমিশনার জনাব আহমেদ রহিম, বিশেষ অতিথী ডঃ আনোয়ারুল ইসলাম (শিক্ষক মানচেষ্টার পলিটিকনিক) প্রধান বক্তা অল্ডহাম বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি আলহাজ মশ্বির খাঁন ও অল্ডহাম বাংলাদেশ মহিলা এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শরিফা বেগম। অনুষ্টান পরিচলনা ও ধারা বিবরণীতে আমি, কোরআন তেলাওয়াত, জাতীয় সংগীত, পুষ্পস্তবক অর্পণ, এক মিনিট নিরবতা, বাংলা স্কুলের ছেলেমেয়েদের নিয়ে কবিতা আবৃতি, গান, নাটক ও ইয়ুথ এসোসিয়েশনের সদস্যদের সৌজন্যে বাংলা নাটক। অনুষ্টানের একদিন আগথেকেই শহীদ মিণারের কাজ শুরু করি, এতে সব চেয়ে বেশি কষ্ট করেছেন সাইফুল আলম।
এই প্রথমবারের মত বাংলাদেশের বাহিরে কাঠদিয়ে শহীদ মিণার তৈরি করি এবং সর্বপ্রথম আমি নিজে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে সকলকে দেখাইলাম কিভাবে শহীদ মিণারে ফুল দিতে হয়। শেরেবাংলা স্কুলের ছেলেমেয়েদেরকে সপ্তাহে তিন দিন করে কবিতা আবৃতি, গান ও নাটকের প্র্যাকটিস করতাম। এ ছাড়াও আর দুই দিন ইয়ুথ এসোসিয়েশনের সদস্যদের নিয়ে নাটকের রিয়ারসেল করতাম। নাটকে যারা অংশগ্রহন করেছিলেন, সাইফুল আলম, ফারুক মিয়া, মোজাহিদ খাঁন, ওয়াহিদুর রাহমান, আলমগির, নুরুল আলী, তজমুল আলী, নজরুল ও শিল্পি নুরুজ্জামান। বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার জনাব আহমেদ রহিম বল্লেন, বিদেশের মাটিতে এত সুন্দর অনুষ্টান এই প্রথম আমি উপভোগ করলাম। বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের কবিতা আবৃতি, গান ও নাটকটি ছিল উপভোগ করার মত। তিনি বাংলা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য বাংলাদেশ থেকে বই আনার প্রতিশ্রুতি দিলেন।
১৯৯২ইং ৭ই মার্চ শনিবার অল্ডহাম বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের সভায় অনেকগুলি কর্মসুচীর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওল্ডহাম যুব সম্প্রদায়ের জন্য বাংলা ক্লাস চালু করে। বাংলাদেশ কালচারেল সেন্টারের জিনিস পত্র ক্রয় করার জন্য একটা অনুদানের ব্যবস্থা করে। ওল্ডহাম বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশন, ওল্ডহাম বাংলাদেশ এসোসিয়েশন, ওয়েস্টউড এডভাইস সেন্টার এবং ওমেন্স এসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে অল্ডহাম বাংলাদেশ কালচারেল সেন্টারের এক্সটেনশনের জন্য ওল্ডহাম কাউন্সিলে একটি এপ্লিকেশন করা হয়। ওল্ডহাম বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশন সিটি চ্যালেঞ্জ কমিটির সাথে একত্রে সরকারের কাছে সিটি চ্যালেঞ্জ দরখাস্ত দাখিল করে। ওল্ডহাম যুবকদের পুলিশি হয়রাণীর জন্য ইয়ুথ এসোসিয়েশন পুলিশের সাথে একটি মিটিং করে। দ্বিতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বাংলাদেশ কালচারেল সেন্টারের ম্যানেজমেন্ট কমিটিতে ইয়ুথ এসোসিয়েশন যুক্ত হয়।
২৫শে এপ্রিল ১৯৯২ইং অল্ডহাম বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় প্রথম বারের মত ঈদমেলা ২২শে মে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়াও ব্রিটিশ রাজনীতিতে অবদান রাখার জন্য এই প্রথম আমরা ৭ জন লেভার পার্টির সদস্য পদ লাভ করলাম। ২২শে জুন ওল্ডহাম গ্রেইঞ্জ স্পোর্টস সেন্টারে অত্যান্ত ঝাকঝমক ভাবেই আয়োজন করা হল ঈদমেলা, এতে গান পরিবেশন করলেন স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ। স্থানীয় স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কৌতুক অভিনয়, এছাড়াও ছিল বিভিন্ন ধরনের স্টল। এতে বেশির ভাগ দর্শক ছিলেন স্বপরিবারে, প্রায় ৮শত দর্শকের সমাগম হয়েছিল এই ঈদ মেলায়। ৪টা জুলাই ১৯৯২ইং ওল্ডহাম বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের সভা অনুষ্টিত হয়, ওল্ডহাম বাংলাদেশ কালচারেল সেন্টারে। এই প্রথম স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্রায়ন ডেভিড এম পি ইয়ুথ এসোসিয়েশনের সাথে বৈটকের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং মিলিত হন। তিনি ইয়ুথ এসোসিয়েশনের সকল এক্টিভিটি পরিদর্শন করেন এবং মত বিনিময় করেন। ১১ই জুলাই ১৯৯২ইং ওল্ডহাম বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সামার হলিডে উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের খেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এতে ফুটবলেঃ তহিদুর রাহমান, রবিউল হাসান ও সাইফুল আলম। ব্যাডমিন্টনেঃ মুহিবুর রাহমান, ছাদরুল আলম এবং কবির উদ্দিন। টেবিল টেনিসেঃ সাইফুল আলম, ছাদরুল আলম এবং আমি। ক্যারেম বোর্ডেঃ ফারুক মিয়া, নুরুল আলী এবং আমি। কাবাডিতেঃ মোজাহিদ ও সাইফুল আলম।
ওল্ডহাম আন্ডারপাস প্রজেক্টঃ ২৬শে জুলাই রবিবার ১৯৯২ইং ওল্ডহাম ইয়ুথ এসোসিয়েশন ও অল্ডহাম কাউন্সিল মিলে ওল্ডহাম অয়েস্টবারণ স্ট্রিট ব্রিজের নিছে একটি চিত্রাংকন করে। এতে প্রধান ভুমিকা রাখেন কাউন্সিল থেকে আন্টুকার, গান পরিবেশন করেন ওল্ডহাম স্থানীয় শিল্পী গোষ্ঠী ঝলক, প্রচুর মানুষের উপস্থিতে অনুষ্ঠান সেলিব্রেশন করা হয়।
ওল্ডহাম সেন্ট্রাল মসজিদঃ ১লা আগষ্ট ১৯৯২ইং ওল্ডহাম বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের সভায় আমাদের সাথে মিলিত হন অল্ডহাম বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের পক্ষথেকে আব্দুল জব্বার, আইয়ুব আলী, আব্দুল মান্নান, সমুজ মিয়া ও মোবাশ্বির খাঁন। আলোচনার বিষয় ছিল, একটি মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা। এতে মোবাশ্বির খাঁন প্রস্তাব করেন মসজিদের নাম হবে “ওল্ডহাম সেন্ট্রাল মসজিদ” এবং ইয়ুথ এসোসিয়েশনকে সাথে নিয়ে মসজিদ নির্মান করতে চান। সভার আলোচনায় সকল এক মত হয়ে ইয়ুথ এসোসিয়েশন থেকে চারজন, এসোসিয়েশন থেকে চারজন, পুরাতন মসজিদ কমিটি থেকে চারজন এবং সকলের পছন্দ অনুযায়ী আর আটজনকে নিয়ে একটি ওইয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়াও যদি কেউ কাউকে ভাল কর্মী মনে করে নাম প্রস্তাব করেন তাকেও কমিটিতে নেওয়া যাবে যদি সকলের সম্মতি থাকে। এর পর সেন্ট্রাল মসজিদের জায়গা খুজার জন্য সকলকে অনুরুধ করা হয়। ঐ বৎসরের শেষের দিগে ওল্ডহাম সেন্ট্রাল কমিটির সভা ডাকা হয় ওল্ডহাম বাংলাদেশ কালচারেল সেন্টারে। উক্ত সভায় জানানো হয় মেইন রোডে একটি ফেক্টুরি বিক্রি হবে এবং সকলকে অনুরুধ করা হয় ফেক্টুরি দেখার জন্য। সকলে মিলে আমরা ফেক্টুরি দেখার পর আব্দুল করিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ফেক্টুরির মালিকের সাথে কথা বলার জন্য। পরবর্তীতে আব্দুল করিম জানালেন, ফেক্টুরি ক্রয় করতে অসুবিধা নেই তবে লেনদেন হতে হবে আন্ডার দ্যা টেবিল। পরে কমিটির সিদ্ধান্ত হয় এই ভাবে আন্ডার দ্যা টেবিল লেনদেন করে মসজিদ করা টিক হবে না। সুতারাং ঐ ফেক্টুরি আর ক্রয় করা হয় নাই।
(চলবে)