৩০ হাজার মানুষের স্বপ্নপূরণে মহাসিং নদীতে সেতু

অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের মহাসিং নদীর উপর নির্মিত হতে যাচ্ছে মহাসিং সেতু।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ সেতু বাস্তবায়ন আলোর মুখ দেখছে।
ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের কবরস্থান এলাকা থেকে কাদিপুর খেয়াঘাটকে সংযুক্ত করবে সেতুটি। এতে উপকৃত হবেন নদীর ওপারের ৮ গ্রামের ত্রিশ হাজারেরও বেশি মানুষ। সেতু নির্মাণে ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ। চলছে ল্যান্ড সার্ভে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ল্যান্ড সার্ভের প্রায় ২০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সার্ভে কর্তৃপক্ষ।
তারা জানান, আরো দু’দিন সময় নিয়ে ট্রপোগ্রাফিক্যাল সার্ভে, ক্রসসেকশন ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন করবেন তারা। এরপর সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা সেতুটির নকশা করার পর এর নির্মাণ ব্যয় তুলে ধরা হবে। তবে, আনুমানিক ৫শ ফুট দীর্ঘ সেতু হবে বলে ধারণা করছে সার্ভে টিম।
মহাসিং নদীর উপর এ সেতু নির্মাণ হলে উপকৃত হবেন জয়কলস, পূর্ব পাগলা ও পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের ৮টি গ্রামের ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। সেতুটিকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থানও হবে কয়েক হাজার মানুষের।
সুনামগঞ্জ জেলার শস্যভাণ্ডার খ্যাত দেখার হাওরের সাথে সরাসরি তৈরি হবে সড়ক সংযোগ। এতে কৃষকেরা জমি থেকে সড়কপথে কম খরচে ও কম সময়ে ধান আনা নেওয়া করতে পারবেন।
এছাড়াও, উল্লেখযোগ্যভাবে উপকৃত হবেন জেলেরা। সিলেট-ঢাকা থেকে মাছ কিনতে আসা ক্রেতারা সরাসরি সড়কপথ ব্যবহারে হাওরের পাদদেশে চলে যেতে পারবেন। তখন জেলেদের দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে পাগলা বাজারে না এসে হাওর পাড়েই কেনাবেচা করতে পারবেন। এ ছাড়াও সহজ সড়ক পথ হলে দেখার হাওরকে কেন্দ্র করে তৈরি হতে পারে পর্যটন সম্ভাবনা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের মহাসিং নদীর উপর সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন গত নির্বাচনে। তিনি তাঁর কথা রাখছেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবার শুরু হচ্ছে নির্মাণ কাজ।
আসামপুর গ্রামের হুমায়ুন কবির, কাদিপুরের হাজি কমর আলী, আবদুল কাইয়ুম, আজাদুল হক আজাদ ও শিবলী মিয়া উচ্ছ্বাস করে বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। সেতুটি নির্মাণ হলে মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে আমরা সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। এখন সার্ভের কাজ চলছে। কাজটি সম্পন্ন হলেই আমরা খুশি।
পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নূরুল হক বলেন, অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটলো। অপেক্ষার প্রহর ফুরালো ৮টি গ্রামের ৩০-৪০ হাজার মানুষের।
পরিকল্পনামন্ত্রী আলহাজ্ব এম এ মান্নান বলেন, মহাসিং নদীর উপর সেতু হবে, এটি আমার নিজেরও একটা স্বপ্ন। এ জন্য আমি বারবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে বলেছি। তাদেরকে তাগাদা দিয়েছি। আশা করছি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই এ সেতুর একটি বাস্তব রূপ আমরা দেখতে পাবো। সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী বলেই দেশে এতো উন্নয়ন হচ্ছে।
ইয়াকুব শাহরিয়ার/সুনামগঞ্জমিরর/টিএম