‘বাজেটে স্বাস্থ্যখাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে’

২০২২-২৩ অর্থবছরের উত্থাপিত বাজেটে দেশের স্বাস্থ্যখাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, বরাদ্দ বাড়লেও নানা পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ঠিকমতো বরাদ্দের অর্থ কাজে লাগানো সম্ভব হয় না।
বুধবার (১৫ জুন) সকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্মেলনকক্ষে হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘কেমন হলো স্বাস্থ্য বাজেট ২০২২-২৩’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বরাদ্দ বাড়লেও নানা পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ঠিকমতো বরাদ্দের অর্থ কাজে লাগানো সম্ভব হয় না। সবসময় আমাদেরকে বলা হয়ে থাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বাজেট বাস্তবায়নে অত্যন্ত ধীরগতির। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমাদের কিছু করার থাকে না।
আমাদের বেশিরভাগ কাজ পিডব্লিউডি করে থাকে, তারা নিজেদের মত করে কাজ করে। খরচ বেড়ে গেলে কাজ বন্ধ রাখে। তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন না হওয়ায় আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। যে কারণে গত বছরে চারটি মেডিকেল কলেজের কাজের মধ্যে তিনটির টেন্ডার করার পরও আমরা কাজ এগিয়ে নিতে পারিনি। যেকোন একটা খরচের ক্ষেত্রে সবার আগে ফাইনেন্স মিনিস্ট্রিতে ছাড়ের জন্য যেতে হয়, সেখানে অনেক সময় লাগে। আমাদের দক্ষতার ঘাটতির সঙ্গে জনবলের সংকট আছে।
জাহিদ মালেক বলেন, একটি বাজেট শুধু হিসেবের খাতা নয়, মানুষের জীবনমানের দলিল। মানুষের জন্য সরকার কোনটিতে জোর দিবে সবকিছু প্রতিফলিত হয় বাজেটে। এতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত থাকে। অর্থনৈতিক সক্ষমতা বিবেচনায় রেখেই বাজেট করতে হয়।
মন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী বাজেটে অনেক কিছু যুক্ত হয়। আমাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতার মধ্যে থেকে বাজেট প্রণয়ন করতে হয়। বাজেটের বিভিন্ন দিক রয়েছে। স্বাস্থ্যে ২০২১-২২ সালের অর্থবছেরর বাজেটের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ কিছুটা বেশি বেড়েছে, তবে সেটি গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধির হার কম।
গত বছর আমরা ৩২ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছিলাম। এবার পেয়েছি ৩৬ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। যা গতবারের তুলনায় ১২ শতাংশের মতো বেড়েছে। তবে গতবার তা ১৪ শতাংশ বেড়েছিল। সরকার স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। আমরা আসলে ৪০ হাজার কোটি টাকার মতো বাজেট পেয়েছি। কারণ হেলথের অনেক কাজ অন্যান্য মন্ত্রণালয় করে থাকে।
জাহিদ মালেক বলেন, এবারের বাজেটে যন্ত্রপাতির চেয়ে গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অসংক্রামক ব্যাধি যাতে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সব হাসপাতালে এনসিডিসি কর্ণার হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাত যাতে আরও মজবুত হয়, ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় যাতে কমে সেটি নিয়ে কাজ করছে সরকার।
তিনি আরও বলেন, বিগত বছরের তুলনায় শতাংশ হাতে না বড়লেও এবার ৪ হাজার কোটি টাকা বাজেট বেড়েছে। এতে রিসার্চের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আট বিভাগে হাসপাতাল তৈরির কাজ করা হচ্ছে, জেলা হাসপাতালে আইসিইউ ও ডায়ালাইসিস বেড স্থাপনে বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রথমিক চিকিৎসার বিষয়ে বাজেটে গুরত্ব দেয়া হয়েছে।
বরাদ্দ অব্যবহৃত থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, করোনা কালে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করা যায়নি। এবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় তা আরও বেশি করতে পারবো বলে আশা করছি। বাজেট ব্যবহারে আমাদের কিছুটা ঘাটতি আছে। অনেক সময় অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজের সমন্বয় করায় সময় বেশি লাগে।
এর ফলে বাজেটের কিছুটা অংশ অব্যবহিত যেকে যায়। প্রতিটি ক্রয় কার্যক্রমে আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় নিতে হয়। এতে সময় লাগে। আমাদের প্রক্রিয়াগুলো লম্বা, ঠিকাদার নিয়োগসহ নানা কারণে সময় বেশি লাগে। অনেক সময় ঠিকাদাররা কাঁচামালের দাম বাড়া ও কমার সাথে কাজের সময় নির্ভর করে।
সুনামগঞ্জমিরর/এসএ