সিলেটে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৪ লাখ ১৬৮১৯ পরিবার

চলমান বন্যায় সিলেটের জনজীবন বিপর্যন্ত হয়েছে; একই সঙ্গে ছন্দপতন এসেছে মানব জীবনেও। বন্যায় তছনছ সিলেট জেলায় পানি নামছে শ্লথ গতিতে। এ বন্যায় জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গেল চব্বিশ ঘণ্টায় পানি নামছে ধীর গতিতে। ফলে সিলেট জেলার বেশিরভাগ এলাকার নিম্নাঞ্চল এখনও প্লাবিত।
টানা দশ দিন ধরে পানিবন্দি থাকা বানভাসিদের দুর্ভোগের যেনো শেষ নেই। তবে নগরের কিছু কিছু এলাকায় পানি কমায় নতুন করে আরেক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এ সব এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রোববার পর্যন্ত বন্যায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আংশিক এলাকা, জেলার ১৩টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৯৯টি ইউনিয়নের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৪ লাখ ১৬ হাজার ৮১৯টি পরিবারের ২১ লাখ ৮৭ হাজার ২৩২ জন সদস্য ক্ষতির মুখে পড়েছেন বন্যায়।
ওই সূত্র জানায়, ২২ হাজার ৪৫০টি ঘরবাড়ি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৮ হাজার ৯৪৫ হেক্টর জমির ফসল পড়েছে ক্ষতির মুখে। বন্যাকবলিত এলাকার জন্য এখন অবধি দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ১৪১২ মেট্রিক টন চাল, ১৩ হাজার ২১৮ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং নগদ ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে।
এদিকে, সিলেট নগর ও আশপাশ এলাকায় গেল ৩/৪ দিনে বন্যার পানি বেশ কমেছে। পানি কমতে শুরু করায় অনেকেই আশ্রকেন্দ্র ছেড়ে নিজ ভূমে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে বর্তমানে রাস্তাঘাটে জমে থাকা বন্যার ময়লা পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, প্রধান সড়কগুলোর যেসব স্থানে পানি জমে ছিল, সেগুলো প্রায় নেমে গেছে। তবে কিছু সড়কে এখনও পানি রয়েছে। এর মধ্যে সিলেট নগরের শাহজালাল উপশহর এবং তালতলা সড়কসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার সড়কগুলোতেও পানি রয়েই গেছে। এখন সব ক’টি সড়কেই যানবাহন চলাচল করছে।
প্রসঙ্গত, গেল ১৫ জুন থেকে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। এ বন্যা দু’দিন পরই তা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয পুরো জেলার ৮০ শতাংশ এলাকা।
নগর এলাকায় পানি প্রায় কমে গেলেও এখনও অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন উল্লেখ করে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, বানভাসিদের বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া ত্রাণসামগ্রি বিভিন্ন ওয়ার্ডে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
সুনামগঞ্জমিরর/এসএ